নির্মল রায়:
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বন্যার পানি কমার সাথে সাথে তিস্তা নদীতে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ফলে ভাঙ্গন হুমকিতে রয়েছে ফসলী জমি ঘরবাড়ি ও যাতায়াতের সড়ক।
বিশেষ করে উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের মহিপুরে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু রক্ষা বাঁধের প্রায় ৩০০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে সেতু ও রংপুর–লালমনিরহাট আঞ্চলিক সড়ক ভাঙ্গন হুমকিতে রয়েছে। তিস্তার পানি বাড়া-কমার সাথে সাথে ৯০০ মিটার দীর্ঘ সেতু রক্ষা বাঁধের ভাঙ্গন শুরু হয় এবছরের গত ১১ আগস্ট থেকে। প্রথমে ৬০ মিটার অংশ ধসে ৭০ ফুট গভীর গর্ত তৈরি হয়। সময়মতো সংস্কার না হওয়ায় ধ্বস আরও বৃদ্ধি পায়। ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০০ মিটার বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয় এবং ৭ অক্টোবর পর্যন্ত সেই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৩০০ মিটার।
এছাড়া নোহালী ইউনিয়নের চর বাগডহরা গ্রামের মধ্য চর, বড়াইবাড়ী খেয়াঘাট সংলগ্ন মন্টু মিয়ার বাড়ির সামনে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ওই ইউনিয়নের মিনা বাজার সংলগ্ন আব্দুল হান্নানসহ কয়েকজনের জমিও ভাঙ্গন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। একই সঙ্গে মিনা বাজার থেকে বড়াইবাড়ী খেয়াঘাট পর্যন্ত নির্মিত বাঁধের মাথা, কাঁচা রাস্তা ও বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
লক্ষীটারী ইউনিয়নের চর শংকরদহ এলাকার কৃষক মুকুল ইসলাম জানান, ধান ঘরে তোলার ঠিক ২০-২৫ দিন আগে হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় ফসল সব নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমরা হাতাশায় ভুগছি।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী শাহ মোঃ ওবায়দুল রহমান জানান, সেতু রক্ষা বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশের বিষয়ে আমরা বিস্তারিত প্রতিবেদন ঢাকায় পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলেই দ্রুত সংস্কারকাজ শুরু করা হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রায় ২০ হেক্টর আমন ধান, ১ হেক্টর মাসকলাই, ২ হেক্টর বীজবাদাম এবং ০.৫ হেক্টর সবজি পানিতে তলিয়ে গেছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা জানিয়েছেন,উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টির কারণে পানি হঠাৎ বেড়ে গিয়েছিল। এখন ধীরে ধীরে পানি কমছে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হবে ।
তিস্তার বন্যা ও ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, আমরা ত্রাণ চাই না, চাই তিস্তা মহা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন।