নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় এক কিশোরী শিক্ষার্থীকে (১৮) বিয়ে না করে দুই বছর ধরে সংসার করার অভিযোগ উঠেছে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই প্রধান শিক্ষক হলেন উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান কুঠিপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদের মাস্টার (৫৫)। তিনি পাইকান কুঠিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর বাবা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের এমন কর্মে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কিশোরী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
অভিযোগে জানা যায়, আব্দুল কাদের ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক দুই বছর আগে ওই শিক্ষার্থীকে বিয়ে করেন। তবে মেয়ের বয়স কম হওয়ায় তখন কাবিন রেজিস্ট্রি করা হয়নি। মেয়ের বাবার অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে কাদের ও তার দুই ছেলে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে অমানবিক আচরণ করতে থাকেন। তারা মেয়েকে যথাযথ ভরণপোষণ দেন না এবং বিভিন্ন সময় নির্যাতন চালান। কাবিননামা রেজিস্ট্রির জন্য চাপ দিলে কাদের টালবাহানা করতে থাকেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, শনিবার সকালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা কাবিননামা রেজিস্ট্রির বিষয়ে এক সালিশী বৈঠকের আয়োজন করেন। কিন্তু কাদের ও তার পরিবার বৈঠকে উপস্থিত না হয়ে ওই শিক্ষার্থীকে জোর করে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শয়নকক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখেন। পরে মেয়েকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে তারা ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে মেয়ের বাবা ও স্থানীয় লোকজনকে প্রাণনাশের ও মিথ্যে মামলায় হয়রানি করার হুমকি দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, ওই কিশোরী চতুর্থ শ্রেণীতে অধ্যয়নকালীন সময়েই তার সাথে প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদেরের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যা প্রায় দুই বছর আগে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়লে প্রধান শিক্ষক তখন ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন।
অপর এক অভিভাবক জানান, ওই স্কুলের শিক্ষার্থী থাকাকালে তার মেয়েকেও ওই প্রধান শিক্ষক কু-প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তখন তার মেয়ে ঝাড়ু নিয়ে গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল কাদেরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিয়ে রেজিস্ট্রির দাবিতে মেয়েপক্ষ থানায় অভিযোগ করেছে। এর বাইরে আর কিছু বলতে পারবো না।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান বলেন, অভিযোগটি হাতে পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।