পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের পীরগাছায় আওয়ামী লীগ নেতা ও কল্যাণী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রাজ্জাককে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছে ছাত্র-জনতা। গতকাল বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার কল্যাণী উচ্চ বিদ্যালয়ে গেলে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের দাবি, প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক ফ্যাসিস্ট দলের একজন নেতা। তাকে তারা আর ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দেখতে চান না। পরে তিনি পুলিশ পাহারায় বিদ্যালয় ত্যাগ করেন।
জানা যায়, প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রাজ্জাক উপজেলার কান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দীতা করেছেন। তার বিরুদ্ধে স্কুলের উন্নয়ন ফান্ডের কয়েক লাখ টাকা আত্মসাত এবং নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর তার রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কারণে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর কয়েক দিনের আন্দোলনের মুখে তিনি দীর্ঘদিন স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন। এক পর্যায়ে তাকে সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করা হয়। তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হলে পিবিআই তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় প্রতিবেদন আদলাতে প্রেরণ করেছেন। দীর্ঘদিন পর তিনি গতকাল বুধবার দুপুরে হঠাৎ করে কিছু লোকজনসহ স্কুলে ঢুকে তার অফিসে বসার চেষ্টা করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী তার উপর চড়াও হয়ে ওঠে। এসময় খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজনও বিদ্যালয় মাঠে জড়ো হন। এক পর্যায়ে তাকে স্কুলের গেটের বাইরে বের করে দেওয়া হয়। পরে ছাত্র-জনতা ধাওয়া দিলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমি ওই স্কুলের বৈধ প্রধান শিক্ষক। আমাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সাময়িক বহিষ্কারের মেয়াদ ১৮০ দিন অতিবাহিত হওয়ায় আমি বিধি মোতাবেক আজ কর্মস্থলে যোগদান করতে গেলে সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে মব সৃষ্টি করে আমাকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি। তবে অন্য শিক্ষকগণ জানান, তাকে কোন অসম্মান করা হয়নি। এসকল বিষয় নিয়ে মামলা চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে মাহিগঞ্জ মেট্রোপলিটন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কুদ্দুস বলেন, খবর পেয়ে তিনি পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ফারুকুজ্জামান ডাকুয়া বলেন, তিনি ঘটনার বিষয়ে কোন কিছু জানেন না। তাকে কেউ জানায়নি।