নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের পীরগাছায় ৬ বছরের এক শিশুকে আপু বলে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে মিজানুর রহমান (৪৫) নামের একজনের নামে থানায় মামলা হয়েছে। অফিসার ইনচার্জ রোমেল বড়ুয়া মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ভিক্টিম বর্তমানে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন আছে। অভিযুক্ত মিজানুর আতঙ্কে আছেন স্থানীয় নারী ও শিশুরা।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের দামুশ্বর গ্রামে। এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভিক্টিম ও ধর্ষক উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের দামুশ্বর গ্রামের একেবারেই নিকটতম প্রতিবেশী। ঘটনারদিন গত ১৯ অক্টোবর সকাল ১১.৪৫ মিনিটে ভিক্টিম শিশু সুমাইয়া আক্তার মেধা খেলার সাথীদের সাথে খেলার সময় ধর্ষক মিজানুর রহমান আদর করে আপু বলে কাছে ডেকে নিয়ে বাড়ির পার্শ্বের বাঁশের টংয়ে বসে হাপ প্যান্ট খুলে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ওই সময় ভিক্টিমের আত্মচিৎকারে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করেন। এরপর স্থানীয় মহৎ প্রধানরা অজ্ঞাতকারণে বিচারের নামে সময় ক্ষেপন করে ধর্ষণ চেষ্টার আলামত নষ্টসহ কৌশলে মামলা করতে বাঁধা সৃষ্টি করেন। অপরদিকে ধর্ষক মিজানুর রহমান ধর্ষণের চেষ্টাকে ধামাচাপা দিতে নিজের স্ত্রীর হাতের তালুতে কেটে দেন বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় মহত প্রধান রেজাউল করিম (পশু ডাক্তার) বলেন, ধর্ষণের চেষ্টাকারি অভিযুক্ত মিজানুরসহ উভয় পক্ষই আমার বাড়িতে গত ২৩ অক্টোবর রাত ১১ টায় বৈঠকে বসার কথা ছিল। বসে স্থানীয়ভাবে আমরা সমাধান করে দিতাম। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের কিছু পূর্বে অভিযুক্ত মিজানুর রহমান বৈঠকে বসতে অপারকতা প্রকাশ করেন। তিনি আরো জানান, ওইদিন রাত অনুমান দেড় ঘটিকার সময় মিজানুরের বড়ভাই আলেপ উদ্দিন আমাকে ফোন করে বলেন, মিজানুরের বাড়িতে মুখোশধারী কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী ঢুকে তাঁর স্ত্রীকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে টাকা-পয়শা নিয়ে গেছে। তবে অভিযুক্ত মিজানুর দুঃচরিত্রবান মানুষ তার দৃষ্টান্তমুলক বিচার হওয়া দরকার।
তবে সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা বলেছেন, মিজানুর রহমান নিজের অপকর্মকে ধামাচাপা দিতে এধরণের নাটক সাজিয়েছে।
আমিনুল ইসলাম বলেন, অধিকাংশ সময় চার টাকা থাকে না শিশু ধর্ষণের চেষ্টার মামলাকে ধামাচাপা দিতে ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকাসহ গহনা লুটপাটের নাটক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা বা ছিনতাই পুরাপুরি ভূয়া, মিথ্যা ও সাজানো-গোছানো নাটক। মূলত মেহেদী হাসান সুমন এর শিশু বাচ্চাকে ধর্ষণের মামলা হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য একটি অপকৌশল মাত্র।
অভিযুক্ত মিজানুরের ভাতিজা বউ শিমি গণমাধ্যমকে বলেন, আমার চাচা শ্বশুর মিজানুর রহমান এই এলাকার নারী-শিশুদের নিকট আতঙ্ক। তিনি অতিতেও অসংখ্যবার নারী-শিশুদের চরিত্র হননের কলংকে কলংকিত। তার নিকট ফুফু পর্যন্ত নিরাপদ নয়। তার ফুফু আহাতন নেছার চরিত্র হননের দায়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার শালিশ-বৈঠক হয়েছে। স্থানীয় শিরিনা বলেন, অতিতেও ভিক্টিম সুমাইয়া আক্তার মেধার মায়ের চরিত্র হননের জন্য বিচারের মুখোমুখি হয়েছিল মিজানুর। একপর্যায়ে বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়িয়েছিল। বড়ভাই আলেপ উদ্দিন এর শ্যালিকার চরিত্র নষ্টের জন্যও তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে। স্থানীয় ওমর ফারুকের ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ফারহানা আক্তারকে অভিযুক্ত মিজানুর তার শরীরের স্পর্শকাতর অংগগুলি দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দিয়েছিল বলে উপস্থিত অনেকেই জানান।
ভিক্টিমের বাবা মেহেদী হাসান সুমন বলেন, স্থানীয় মহত প্রধানরা বিচারের নামে সময় নষ্ট করে ধর্ষণ চেষ্টার আলামত নষ্ট করার চেষ্টা করার জন্য তাদের ও আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত মিজানুর রহমানকে একাধিক বার মোবাইল করা হলেও তার নম্বর বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ রোমেল বড়ুয়া বলেন, এজাহার পেয়ে তাৎক্ষণিক পিও ভিজিট করে মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চেষ্টা চলছে। মামলা নম্বর-১৯।