মিঠাপুকুর (রংপুর)প্রতিনিধি:
সম্প্রতি মিঠাপুকুর জায়গীরহাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে জমির খাজনা দিতে যান নতিবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান। ৫৫ শতক জমির খাজনা বাবদ ভূমি কর্মকর্তা আল-আমিন মিয়া চান ৩৩ হাজার ৭ শ ৫৯ টাকা। দরকষাকষিতে ২৬ হাজার ৫শ টাকায় চুক্তি হয়। টাকা নেওয়ার পর ভূমি কর্মকর্তা পুরো জমির খাজনা বাবদ ১ হাজার ৫শ ৬২ টাকা পরিশোধের রশিদ কামরুজ্জামানের হাতে হাতে তুলে দেন। বাকি টাকাটুকু ভূমি কর্মকর্তা পকেটস্থ্য করেন। এছাড়াও তাহিয়ারপুর গ্রামের মোকলেছুর রহমানের কাছে জমির খাজনা বাবদ ৬ হাজার ৮৩ টাকা নেন ওই ভূমি কর্মকর্তা। রশিদে দেয়া হয় ১ হাজার ৮৩ টাকা। - এরকম নানা অভিযোগ ওই ভূমি কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা অনেক মানুষের। এরমধ্যে রংপুর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কামরুজ্জামান ও মোকলেছুর রহমান।
সরেজমিনে গিয়ে কথা হয়েছে কয়েকজন ভূমি সেবা গ্রহনকারীর সঙে। হাফিজুর রহমান বলেন, জমির খারিজ, নামজারি, খাজনা প্রদান কিংবা রেকর্ড সংশোধন যে কাজই হোক না কেন, টাকা ছাড়া অফিসে কোনো ফাইল অগ্রসর হয় না। এখন এই ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিণত হয়েছে ঘুষ বাণিজ্যের কেন্দ্রে। যে কোনো ধরনের সেবা পেতে হলে ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আল- আমিন কে ঘুষ দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তাঁর অফিসে রয়েছে দালাল চক্র। যারা নানা ধরনের সমস্যার কথা বলে সেবাগ্রহীতাদের ঘুষ দিতে বাধ্য করছে।
নাম প্রকাশ্যে অনইচ্ছুক কয়েকজন, জায়গীরহাট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে মৌখিকভাবে এক ধরনের খাজনা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু রসিদে দেওয়া হয় অল্প টাকার চেক। এর বাইরে সব টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা।
ভুক্তভোগী কামরুজ্জামান বলেন, জায়গীরহাট ইউনিয়ন অফিসে ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আল আমিন আমার কাছে জমির খাজনা বাবদ ৩৩ হাজার,৭শ ৫৯ টাকা দাবি করেন। তারমধ্যে আমি ২৬ হাজার ৫শ টাকা প্রদান করি। কিন্তু আমার হাতে দুটি রশিদ ধরিয়ে দেন। একটি ১ হাজার ৫শ ৬২ টাকার ও আরেকটি আমার ভাইয়ের ১ হাজার ৮শ ৭৯ টাকা। তবে বাকি টাকার কথা জিজ্ঞাস করলে ভূমি কর্মকর্তা বিষয়টি এড়িয়ে যান।
আরেক ভুক্তভোগী মোকলেছুর রহমান বলেন, জমির খাজনা দিতে গিয়ে ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আল আমিনকে ৬ হাজার ৮৩ টাকা প্রদান করি। তিনি আমার হাতে একটি ১ হাজাে ৮৩ টাকার রশিদ ধরিয়ে দেন এবং বলেন আপনার খাজনা দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকার রশিদের কথা বললে তিনি আর কিছুই বলেন নি।
অভিযুক্ত ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আল আমিন মিয়া মুঠোফোনে বলেন, আমার কার্যালয়ে কোন টাকা লেনদেন হয়না। তাদের অভিযোগুলো মিথ্যে।
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার( ইউএনও) নাজমুল হাসান বলেন, বিষয়টি আগে জানতাম না। এখনই অবগত হলাম। যেহেতু ডিসি স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে। স্যার নির্দেশ দেওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।