হিলিতে কলা চাষে আগ্রহ বাড়লেও ন্যায্য দাম নিয়ে দুশ্চিন্তা কৃষক

2025-11-08 02:57:32

মোঃ আব্দুল আজিজ, হাকিমপুর (দিনাজপুর):

দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার (হিলি) কৃষকদের মধ্যে কলা চাষে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। অন্যান্য প্রচলিত ফসলের তুলনায় কম পরিশ্রম, কম খরচ এবং উপযোগী আবহাওয়ার কারণে এ অঞ্চলের কৃষকরা এখন কলাকে অর্থকরী ফসল হিসেবে গ্রহণ করছেন। তবে এ বছর কলার রেকর্ড ফলন হওয়ায় বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের প্রত্যাশিত লাভ হচ্ছে না।

হিলি ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় এখন পতিত জমি, পুকুর পাড়ে এবং উঁচু জমিতেও কলার বাগান চোখে পড়ছে। এখানকার মাটি কলা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।

কলা চাষিরা জানিয়েছেন, একবার চারা রোপণ করলে কয়েক মৌসুম ধরে ফলন পাওয়া যায়, যার ফলে উৎপাদন খরচও কমে আসে। বিশেষ করে সবরি, সাগর, মেহের সাগর, চম্পা এবং আনাজি কলার জাতগুলো এখানে বেশি জনপ্রিয়। এ বছর অনুকূল আবহাওয়ার কারণে কলার ফলন হয়েছে বিপুল পরিমাণে, যা স্থানীয় ভাষায় 'বাম্পার ফলন' হিসেবে পরিচিত। এই উৎপাদন প্রাচুর্যই এখন কৃষকদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারে কলার আমদানি বেড়ে যাওয়ায় দাম উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গেছে।

কয়েকজন কৃষকের দেওয়া তথ্যমতে, গত বছর প্রতি কাঁদি (কাইন) কলা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হলেও, বর্তমানে সেই কলার দাম নেমে এসেছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। চাষিদের বক্তব্য, যদিও উৎপাদন খরচ উঠে আসছে, তবুও যে লাভের আশায় তারা চাষ করেছিলেন, তা পূরণ হচ্ছে না।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, চলতি বছরে উপজেলায় ৭ হেক্টর জমিতে কলার আবাদ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় বেশি। কলা চাষে আগ্রহীদের সব ধরনের প্রযুক্তিগত ও কৌশলগত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

কৃষি কর্মকর্তারা মনে করছেন, ভবিষ্যতে যদি ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা যায় এবং কলার স্থানীয় বাজার ছাড়াও বহিরাগত বাজারে সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়, তবে এই অঞ্চলের কলা চাষিরা আরও বেশি উৎসাহিত হবেন এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।