কাউনিয়ায় তিস্তার চরাঞ্চল গ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক নির্মাণ করছেন গ্রামবাসী

2025-11-26 17:21:47

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি:

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার চরাঞ্চল গ্রামে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে রাস্তা না থাকায় তিস্তার শাখা নদীতে পাকা সেতুর নির্মাণ কাজ করতে পারছে না হারাগাছ পৌর কর্তৃপক্ষ। অবশেষে পৌর শহরের শাখাঁরীপাড়া সহ চরাঞ্চলের আট গ্রামে যাতায়াতের কষ্ট দুর করতে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক নির্মাণ করছেন এলাকাবাসী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাউনিয়ায় হারাগাছ পৌর এলাকার শাখাঁরীপাড়া সহ চরাঞ্চলের আট গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার বাসিকে যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানে সুবিধার আওতায় আনতে তিস্তার শাখা নদীতে পাকা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেতুর পুর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে এপ্রোচ সড়কের জায়গা না থাকায় পাকা সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে রাখে পৌর কর্তৃপক্ষ। এতে করে চরাঞ্চলের আট গ্রামের লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

স্বেচ্ছাসেবক কামাল হোসেন, রফিকুল ও সুমন সহ আরো অনেকেই বলেন, ‘আমরা নাম মাত্র পৌর শহরে বসবাস করছি। সব প্রকার রাজস্ব কর দিয়ে এলেও আমরা ৯ নম্বরের এক অংশ পৌর সভার সব সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস কিংবা অ্যাম্বুল্যান্সের প্রয়োজন হলে শুধুমাত্র সড়কের কারণে পাই না। গত ৭ বছর ধরে এ অবস্থা চলছে। সড়ক না থাকায় সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। বাধ্য হয়ে আমরা গ্রামবাসী স্বেচ্ছা শ্রমে সড়কটি নির্মাণ কাজ করছি। আশা করছি পৌর কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করবে।

স্থানীয় সাবেক কমিশনার মাহবুবর রহমান বলেন, সেতুর পশ্চিমপ্রান্তে সড়কের জায়গা না থাকায় সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। স্থানীয়রা সড়কের জন্য জায়গা ছেড়ে দিয়েছে এবং এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক নির্মাণ করছেন। নির্মাণ শেষ হলে সেতুর দুইপ্রান্তের সাত গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দা ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) হামিদুর রহমান বলেন, ২০১৮-২০১৯ ও ২০২০-২০২১ অর্থবছরে পৌরসভার উন্নয়ন তহবিলের অর্থায়নে দুটি দরপত্রের মাধ্যমে পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের বাংলাবাজার দক্ষিণ ঠাকুরদাস মস্তেরপার এলাকায় তিস্তা শাখা নদীর ওপর ৭৬ মিটার দীর্ঘ পাইল সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। দু’দফায় যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৪ লাখ ৬৯ হাজার ৭৩৩ টাকা। কিন্তু পশ্চিম প্রান্তে রাস্তা না থাকায় সেতুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্নের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। শুনেছি ওই এলাকার লোকজন সড়কের জন্য পশ্চিম প্রান্তে জায়গা ছেড়ে দিয়েছে এবং তারা স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক নির্মাণ করছেন। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সেতুর অসমাপ্ত নির্মাণ কাজের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তবে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভার প্রশাসক (সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংকন পাল বলেন, অসমাপ্ত সেতুটির দুইপ্রান্তে এপ্রোচ সড়ক ছিল না। পশ্চিম প্রান্তের লোকজন সড়কের জন্য জায়গা দিয়েছে। তবে পুর্বপ্রান্তে সড়কের জায়গা পাওয়া গেলে টেন্ডারের মাধ্যমে অসমাপ্ত সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।