মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি:
রয়েছে অবকাঠামো ও শিক্ষক মন্ডলী। কিন্তু নেই শিক্ষার্থী ও উপস্থিতির হার। প্রতি শ্রেণীতে দু'তিন জন করে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি। এমননি পরিস্থিতি মিঠাপুকুরের রুহিয়া বানিনাতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। শুধু এই বিদ্যালয়ে নয়, মিঠাপুকুরের অনেক বিদ্যালয়ের চিত্র এমনটি।
মিঠাপুকুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে,২৭৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯৭টিতে নেই প্রধান শিক্ষক। সহকারী শিক্ষক পদেও শূন্যপদ ১২৪টি। শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষককেই একাধিক শ্রেণির দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এতে ক্লাস নেওয়ার গতি কমে যাচ্ছে এবং শেখার মান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
Pগতকাল (২৩ নভেম্বর) রবিবার সকালে উপজেলার রুহিয়া বানিনাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭৫ জন। উপস্থিতি প্রতি শ্রেণীতে দু'তিনজন করে।
উপস্থিতি কম বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মন্জু মন্ডল বলেন, অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরী হয়ে পড়েছে,
যাতে তারা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে উৎসাহিত হন। উপস্থিতি বাড়াতে
স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামের আওতা বাড়ানো সহ দরিদ্র পরিবারের শিশুদের বৃত্তি দেওয়া এবং শিক্ষা উপকরণ সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজনের কথা বলেন তিনি।
আশাদুল মিয়া নামের একজন অভিভাবক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমস্যা সম্পর্কে বলেন, শ্রেণিকক্ষ স্বল্পতা, মানসম্মত শিক্ষার অভাব, শিক্ষক স্বল্পতা ও প্রশিক্ষণের অভাবকে দায়ী করেন।
কিভাবে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন করা যায় এমন প্রশ্নে,বুড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ মিয়া বলেন, গত এক বছরে প্রাথমিক স্কুলে ঝরে পড়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুপাত ঠিক রেখে শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা বাড়ালে প্রাথমিক শিক্ষার বিস্তার লাভ করা সম্ভব।এছাড়াও শিক্ষকদের সঠিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা সহ তাদের মধ্যে পেশাদারিত্ববোধ তৈরি করতে সম্মিলিত ভাবে কাজ করতে হবে।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শহীদুল ইসলাম সাধন বলেন, শিক্ষকদের বেতন, পদোন্নতি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে অসন্তোষের কারণে , নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে বলে লক্ষ করা যায়।।শিক্ষকদের দাবি ও সুবিধা-অসুবিধার দিকে নজর সরকার কে রাখতে হবে, যাতে তারা তাদের দায়িত্ব পালনে মনোযোগ দিতে পারেন।শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ মনে করেন তিনি।
মিঠাপুকুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র রায় বলেন, শ্রেণীকক্ষে উপস্থিতি বাড়াতে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবক সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় পর্যায়ে সামাজিক প্রচারণা জোরদার করতে হবে। বিদ্যালয়ের পরিবেশকে শিশুবান্ধব, আনন্দদায়ক ও নিরাপদ করে তুললে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।