মোস্তাফিজুর রহমান বদরগঞ্জ (রংপুর):
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় কয়েকদিন দিন ধরে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় চরম দুর্ভোগে পড়ছে মানুষেরা। তবে শীত নিবারণের জন্য সরকারি সহায়তা নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। শীতার্ত মানুষের অভিযোগ, প্রয়োজনের সময় তারা কম্বল পাচ্ছে না। তবে উপজেলা প্রশাসনের দাবি, কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
রাধানগর ইউনিয়ন মাদারগঞ্জ এলাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা যায় নিলুফা নিলুফা বেগম নামের এক নারীকে। শীতের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন,এই ঠান্ডায় হাত-পা টশ্মি/ কোঁকড়া হয়ে যাচ্ছে। আগুন প্রোফাইলে পোয়াইলেও ঠিকমতো কাজ হয় না। আগের বছর শীত আসার আগেই কম্বল পাইছিলাম। এবার শীত আইসা চলি যাচ্ছে, কেউ খোঁজও নিল না।
সরেজমিনে উপজেলার লোহানী পাড়া ও কুতুবপুর ইউনিয়নের নদী নদবর্তী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিনমজুর, বয়স্ক নারী-পুরুষ ও শিশুরা শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অথচ শীত নিবারণে সরকারি সহায়তার কোনো দৃশ্যমান উপস্থিতি চোখে পড়েনি।
দামোদরপুর ইউনিয়নের মোস্তাফাপুর জলুবর এলাকায় ভুট্টা খেতে কাজ করার সময় কথা হয় দিনমজুর রমজান আলী (৫৫) সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, এবারে পরিষদ থেকে এখন পর্যন্ত কম্বল পাইনি। আমরা জানিও না কম্বল আছে কিনা।ঠান্ডা বাড়ার কারণে কোমর আর ঘাড়ের ব্যথা এমন হইছে যে ঠিকমতো হাঁটতেও পারি না। এখন অনেক শীত রাতে ঘুম হয় না। কম্বল পেলে শান্তিতে ঘুমাতে পারতাম।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, চলতি শীতে শীতার্ত মানুষের জন্য উপজেলায় প্রায় ১৪ শত কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এরমধ্যে প্রতিটা ইউনিয়ন পরিষদে ৮০টি করে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। তবে পরিষদে গিয়ে দেখা যায় কম্বল বিতরণের কক্ষে তালাবদ্ধ।
এদিকে রামনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, উপজেলা পরিষদ থেকে যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে আমি এখন পর্যন্ত জানিনা।
দামোদরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এই ইউনিয়নে ৫০০ কম্বল দিলেও চাহিদা শেষ হয় না। সেখানে সচিবের মাধ্যমে মাত্র ৮০টি কম্বল দিয়েছে। এখনো বিতরণ শুরু করা হয়নি।
রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর বলেন, মাত্র ৮০টি কম্বল দিয়েছে সচিব কে তিনি ওই কম্বল বিতরণ করবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মুশফিকুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, চলতি বছরে কম্বল যে বরাদ্দ এসেছে। আমরা প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সচিব কে বিতরণের জন্য দিয়েছি। তারা বিতরণ করেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আঞ্জুমান সুলতানা বলেন, উপজেলায় যে কম্বলের বরাদ্দ ছিল তা আমরা বিতরণ করছি। তবে পৌরসভায় এখন পর্যন্ত কোন বরাদ্দ খবর পাওয়া যায়নি। পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, পৌরসভায় কম্বল বিতরণের কোন খবর আমার জানা নেই।