এম এ রশিদ- ঢাকা:
রাজধানী সায়েন্স ল্যাব এলাকার বিস্ফোরণের রেশ কাটতে না কাটতেই আবার মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে গুলিস্তান সিদ্দিকবাজারে নর্থ-সাউথ রোডের ১৮০/১ হোল্ডিংয়ে ঘটল ভয়াবহ বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল যে মুহূর্তেই কেঁপে ওঠে পুরো এলাকা। ভয়াবহ এ বিস্ফোরণের ঘটনায় দেয়াল ভেঙে রাস্তায় এসে পড়েছে। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়কের গাড়িও। হতাহত হয়েছেন বিভিন্ন গাড়ির যাত্রী ও পথচারীরাও। বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮-তে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল সূত্র ।
নিহত ১৮ জনের মধ্যে রয়েছেন- মো. সুমন (২১), ইসহাক মৃধা (৩৫), মনসুর হোসেন (৪০), মো. ইসমাইল (৪২), আল আমিন (২৩), রাহাত (১৮), মমিনুল ইসলাম (৩৮), নদী বেগম (৩৬), মাইনউদ্দিন (৫০), নাজমুল হোসেন (২৫), ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫), আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), আকুতি বেগম (৭০), মো. ইদ্রিস মীর (৬০), নুরুল ইসলাম ভুইয়া (৫৫) ও হৃদয় (২০), সিয়াম (২০) ও সম্রাট। নিহতদের মরদেহ ঢামেকে রাখা আছে।
দুর্ঘটনায় আহতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় শতাধিক, তাদের ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনাস্থলে কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে তিনি আরো বলেন ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিতে আরও লোক আটকা আছেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।’
বিস্ফোরণের পরই উদ্ধার কাজে অংশ নেয় ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট। বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থল থেকে আহতদের হাসপাতালে নেয়ার কাজ করেছে। এ ছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী ও স্থানীয়রাও উদ্ধার কাজ করেছেন।
বিস্ফোরিত ভবনটি ঝুঁকিমুক্ত করতে নেয়া হচ্ছে যেসব পদক্ষেপ : ফায়ার সার্ভিস ডিজি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে গুলিস্তান থেকে নর্থ-সাউথ রোড পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। ‘ভবনের বেজমেন্ট এবং নিচতলা একদমই ধসে গেছে। এ অবস্থায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আপাতত উদ্ধার কার্যক্রম কিছুটা ব্যাঘাত ঘটছে- তিনি আরো জানান, সেনাবাহিনী যন্ত্রপাতি নিয়ে এসেছে। এই ভবনটি এখন স্টেবল করতে হবে। না হলে ভেতরে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। ভেতরে কতজন আছে সে সংখ্যাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলেও জানান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।
উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও জানান, এমনভাবে বিস্ফোরণে ভবনটি ধসে পড়েছে যে ভেতরে ঢোকার কোনো অবস্থা নেই। জায়গায় জায়গায় ইট ঝুলে আছে। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেছি। আমরা বের হওয়ার পর আরেকটি টিম ভেতরে ঢুকেবে।
ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক জানান, আমাদের যারা এক্সপার্ট আছেন, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত কাজ চলছে এরপর বুঝা যাবে এটা কোনো নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা।