জসিম উদ্দিন;খানসামা (দিনাজপুর):
"আমন চাষ বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। খনার বচনে বলা হয়েছে ‘আষাঢ়ে পনের শ্রাবনে পুরো/ধান লাগাও যতো পারো।’ তবে এবার আষাঢ়-শ্রাবণ পেরিয়ে গেলেও আশানরূপ বৃষ্টি হয়নি। এতে আমন চাষ নিয়ে দেশের অধিকাংশ অঞ্চলের কৃষক বিপাকে পড়েন। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সেচের মাধ্যমে আমন চাষ শুরু করে কৃষকরা। আশঙ্কা করছিলেন, এ বছর হয়তো আমনের আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে না। কিন্তু,অবশেষে ভাদ্রের বৃষ্টি কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। বৃষ্টির ছোঁয়ায় শুকিয়ে যাওয়া প্রকৃতি প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
উপজেলার ছাতিয়ান গড় গ্রামের কৃষক জবেদ আলী সকালের সময়কে বলেন, 'বৃষ্টি না থাকায় প্রথমে ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিনে সেচ দিয়ে আমনের চারা রোপণ করতে হয়েছে। বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। লাগাতার বৃষ্টি না হওয়ায় আশানুরূপ ফলনের আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম।'
'গত কয়েকদিন থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। ধানের খেত প্রাণ ফিরে পেয়েছে। আগের তুলনায় আমনের বেশি ফলনের আশা করছি।'
'এ বছর ৩ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছি' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'গত কয়েকদিনের বৃষ্টি আমাদের স্বস্তি এনে দিয়েছে।'
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা হয় 'সকালের সময়ের' এ সময় জানান, আমন আবাদটা কৃষকের অনেক লাভজনক। তাই যেভাবেই হোক আমরা আমনের চারা রোপন করেছি। কারণ, এতে সেচ লাগে না বৃষ্টির পানিই যথেষ্ট। এতে ফলনও ভালো পাওয়া যায়। তবে এ বছর ভরা আমন চাষের বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় আমরা শ্যালো মেশিন ও সেচের পানি দিয়ে বোরো ধানের মতো ব্যয় করে আমনের চাষাবাদ করেছি। শ্যালোমেশিন ও সেচ দিয়ে গত ১ মাস আমন ক্ষেতে পানি দেওয়া অব্যাহত ছিল। হঠাৎ দুই দিনের টানা ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় আমন ক্ষেত দেখে সত্যিই আমাদের মন ভরে গেছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমী এ বছর খানসামা উপজেলায় ১৩ হাজার ৭ শত ৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। 'আমন চাষ বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। এ বছর ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে কৃষকদের আমন চাষ করতে হয়েছে। কৃষককে বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। লাগাতার বৃষ্টি না হওয়ায় তারা আমনের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন।'