কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের কাউনিয়ায় উজানের ঢল আর টানা বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ শনিবার (২৬ আগষ্ট) বেলা ৩ টায় কাউনিয়া রেলওয়ে সেতু পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ২৯ দশমিক ২২ সেন্টিমিটার। ওই পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানির বিপৎসীমা ২৮ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। এদিকে ভোর থেকে নদীতে পানি হু হু করে বাড়ায় পানি বন্দি হওয়ার আতঙ্কে চরাঞ্চল গ্রামের অনেকেই গবাদিপশু উঁচু স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। অপরদিকে নদীর তীরবর্তী আমন ক্ষেত ও সবজি খেত তলিয়ে গেছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শনিবার (২৬ আগষ্ট) ভোর ৬ দিকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। অপরদিকে আজ শনিবার বিকেল ৩ টার দিকে কাউনিয়া রেলওয়ে সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সূত্র আরও জানায়, ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে পানি বেড়ে যাওয়ায় কাউনিয়া উপজেলার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নিম্ণাঞ্চল গ্রামগুলো প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী বলেন, গতকাল শুক্রবার রাত থেকে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। আজ শনিবার ভোর থেকে দ্রুত পানি বেড়ে তার ইউনিয়নের চরঢুষমারা গ্রামে কিছু বসতবাড়ীর উঠানে পানি ঢুকেছে। তিনি বলেন, যেভাবে নদীতে পানি বাড়ছে, সন্ধা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চরাঞ্চল ও নদীর তীরবর্তী গ্রামের অনেক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়বে।
টেপামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, আজ ভোর থেকে তিস্তার নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে শুরু করে। পানি বাড়া অব্যাহত থাকলে তার ইউনিয়নের চর গনাই, বিশ্বনাথ, হয়বৎখা, আজমখা গ্রাম পানি বন্দি হয়ে পড়বে। ইতিমধ্যে চরাঞ্চলের অনেক আমন খেত সহ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার শাহনাজ পারিভন জানান, টানা বৃষ্টি ও নদীর পানিতে নি¤œাঞ্চলে প্রায় দুই শতাধিক বিঘা জমির আমন চারা তলিয়ে গেছে।
কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিদুল হক জানান, সার্বক্ষণিকভাবে তিস্তার চরাঞ্চল ও নদীর তীরবর্তী এলাকাসমূহ তদারকি করা হচ্ছে। বিকেল ৩ টা পর্যন্ত কোথায় প্লাবিত বা পানি বন্দি হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। মাঠ পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ খবর নিচ্ছে। সরকারিভাবে আমাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। যখন যা প্রয়োজন হবে, তখন তা পৌঁছে দেয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলীয় তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান, ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে আসা ঢলে তিস্তায় পানি বাড়ছে। পানির চাপ সামলাতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট সবকটি খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে করে ভাটির অঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।