নির্মল রায়,গঙ্গাচড়া (রংপুর):
উজানের পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। অনেকে গবাদী পশু নিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। ডুবে গেছে চরের আমন ও শাক-সবজির ক্ষেত।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, উজানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে গতকাল শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। শুক্রবার তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে অতিক্রম করে। শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে করে গঙ্গাচড়া উপজেলার নোহালী ইউনিয়নের চর বাগডোহরা, চর নোহালী, বৈরাতি, কোলকোন্দ ইউনিয়নের চিলাখাল, মটুকপুর, বিনবিনার চর, লহ্মীটারী ইউনিয়নের চর ইচলী, শংকরদহ, বাগেরহাট, জয়রাম ওঝা, চর চল্লিশাসাল, গজঘন্টা ইউনিয়নের ছালাপাক, জয়দেব, রাজবল্লভ, মর্ণেয়া ইউনিয়নের চর মর্ণেয়া, নীলারপার এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
উপজেলার লহ্মীটারী ইউনিয়নের শংকর দহ এলাকার আবুল কাশেম (৫০) বলেন, প্রায় এক মাস ধরি তিস্তা নদীত ম্যালা পানি আছে। কাইল থ্যাকি পানি হামার গ্রামোত ঢুকছে। আইতোত (রাতে) পানি গ্রামোত ঢুকি পড়ছে। ঘরের ভেতরোত পানি ঢুকি গেইছে। চৌকিত আন্দাবাড়ি করা লাগতোছে। পানি উঠলে হামার ম্যালা কষ্ট হয়।
জয়রাম ওঝার কৃষক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, নদীর পাড়ের মাইনষের ম্যালা কষ্ট। সরকার নদীত বান্ধ দেয় না। প্রতি বছর হামার আবাদী জমি নষ্ট হয়, ঘরবাড়ি ভাঙ্গি যায়। কতবার অফিসারের ঘরোক কইছি। কায়ো হামার কতা শোনে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছি। দুর্গত মানুষের সহায়তায় ১০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় সার্বক্ষনিক মনিটরিং রাখতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরের নদ-নদীর পানি বেড়েছে। তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করছে। পানি বৃদ্ধির কারণে নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে।