রংপুরের পীরগঞ্জে সড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসহায় মানুষের বসবাস

আমাদের প্রতিদিন
2024-09-14 14:12:59

ওরা সরকারি ঘরের অপেক্ষায়

পীরগঞ্জ (রংপুর)প্রতিনিধিঃ

রংপুরের পীরগঞ্জে ৩ কিলোমিটার সড়কে দখল করে বাড়িঘর নির্মান করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন শতাধীক অসহায় ভূমিহীন পরিবার। জানা যায়, উপজেলার পৌরসভার চৌরারহাট থেকে হরিণ শিং দীঘির পাড় পর্যন্ত ৩ টি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক ভুমিহীন পরিবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর আওতাভুক্ত সড়কের টিনের বেড়া দিয়ে ঘর বানিয়ে বসবাস করছেন। নিজেদের জায়গাজমি না থাকায় এভাবেই ঘর তৈরী করে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছেন অসহায় মানুষগুলো।  পাকাসড়কের উপর এভাবে বসবাস যেমন তাদের জন্য ঝুকিপূর্ণ তেমনি সড়ক দখল হয়ে পড়ায় সড়ক দুর্ঘটনার আশংকাও রয়েছে।

হরিণ শিং এলাকায় বসবাসকারী দুলা মিয়া জানান, আগে তার বাড়ি ছিল কাবিলপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে। ৪ শত জমিতে দুই ভাই বোন মিলে বড় কষ্টের মধ্যে দিন কাটতো। জন্মস্থানে জায়গা না থাকায় শশুর বাড়ী এলাকায় রাস্তার উপর মাটির ঘর বানিয়ে ঠাঁই নিয়েছে। গত ১২ বছর থেকে তিনি ২ টি পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।

চতরা এলাকার ধর্মদাস গড়ের বাসিন্দা, আতিয়ার রহমান , ওহেদ আলী, মিজানুর রহমান, সালাম মিয়া, সাহানারা, ফজিলা, মাজেদা বেগম বলেন, তাদের সংসারে লোকসংখ্যা বেশি জায়গাজমি না থাকায় তারা ৮/১০ বছর আগে  এখানে এসে ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে বসবাস করছে । একাধিক পরিবারের লোকজন দাবি করছে উপজেলা ও ইউনিয়ন ভুমি অফিসে সরকারি ঘরের জন্য আবেদন করেছে এবং আশায় রয়েছে তারা সরকারি ঘর পাবে।

স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, রাস্তার উপর জারাই বসবাস করছে তারা সকলেই অসহায়। ব্রিটিশ রাজা ও জমিদারদের  সময়ে  তৈরি করা হয়েছে  উঁচু গড় বর্তমানে এটি এখন (এলজিইডি)র রাস্তা নির্মান করা হয়েছে। এই রাস্তার দুই পাশেই অনেক খাস জমি রয়েছে তাই এখানে অসহায় মানুষ গুলো আশ্রয় নিয়েছে।

এছাড়াও চতরা ইউনিয়নের ধর্মদাস পলি পাড়া  থেকে কাঙ্গুর পাড়া পর্যন্ত সরকারি গড়ের উপর প্রায়  শতাধিক পরিবারের লোকজন ঝুপড়ি ঘর নির্মাণ করে জীবিকা নির্বাহ করছে  । নিজস্ব জায়গাজমি না থাকায় তারা এই গড়ের উপর আশ্রয় নিয়েছে।

উপজেলা ভুমিহীন কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, পীরগঞ্জ উপজেলায় তাদের সমিতির অনুকূলে প্রায় ৫ হাজার ভুমিহীন পরিবার রয়েছে। ১৫ টি ইউনিয়নে এসব ভুমিহীন পরিবারের সদস্যগণ ছড়িয়েছে ছিটিয়ে রয়েছে বলে তিনি জানান।  এ ব্যাপারে রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল চৌধুরী  জানান, সড়কের উপর ঘর বাড়ি তৈরী করে শতাধিক পরিবার বসবাস করে। এদের মধ্যে অধিকাংশই লোকজন অসহায় ও ভুমিহীন। তাদের পুনর্বাসন করা গেলে প্রশস্ত সড়কটি দখলমুক্ত করা সম্ভব। চতরা ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহীন বলেন, চতরা ইউনিয়নের ধর্মদাস পলিপাড়া থেকে কাঙ্গুর পাড়া গড়টি ব্রিটিশ রাজা ও জমিদারের হাতে নির্মাণ। বর্তমানে এটি এখন খাস তাই এখানে  প্রায়  শতাধিক পরিবারের লোকজন ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করে। এসব অসহায় পরিবারের লোকজনের জন্য গৃহ নির্মাণ কাজ অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।