তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধিঃ
রংপুরের তারাগঞ্জে সয়ার ধোলাইঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহারের বিরুদ্ধে স্লিপ ও রুটিন মেইনটেন্যান্সের নামে নামমাত্র কাজ দেখিয়ে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বের অবহেলা আর অসদ আচরনের কারনে শিক্ষার্থীরা সংখ্যা দিন দিন শুন্যের কোঠায় এসেছে। খাতায়-কলমে ১৩৩জন থাকলেও বাস্তবে ৫৭জন রয়েছে। অথচ উপবৃত্তির টাকা প্রদান করা হচ্ছে শতাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের মুঠোফোনে।
শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ ইং অর্থ বছরে রুটিন মেইন্টেন্যান্সের ৪০ হাজার ও স্লিপের নামে ওই বিদ্যালয়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৯০ হাজার টাকা। ভ্যাট ও আইটি বাদে উত্তোলন করা হয়েছে ৭৮ হাজার তিন শত টাকা।
গতকাল মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দুপুর ২ টায় গিয়ে দেখা যায়, ওই বিদ্যালয়ে খাতায়-কলমে প্লে থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ১৩৩জন শিক্ষার্থী থাকলেও বাস্তবে প্লে শ্রেণীতে ১৪ জন, প্রথম শ্রেণীতে ১০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ১১ জন, তৃতীয় শ্রেণীতে ৬ জন, চতুর্থ শ্রেণীতে ৬ জন এবং পঞ্চম শ্রেণীতে ৭ জনসহ ৬টি ক্লাসে ৫৭ জন উপস্থিত ছিলো বলে ওই প্রধান শিক্ষক নিজেই জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিভাবকের সাথে কথা হলে তারা জানায়, প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বের অবহেলা আর অসদ আচরনের কারনে আমাদের সন্তানকে অন্যত্রে ভর্তি করে দিয়েছি। প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার জানান, করোনা থেকে শুরু হয়েছে শিক্ষার্থী না আসা। আর বর্তমানে প্রচন্ড তাপদাহের কারনে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছে না। কতজন শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পাচ্ছে এ বিষয়ে কথা হলে প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার জানান, শতাধিক শিক্ষার্থী । সরকারিভাবে বরাদ্দের বিষয়ে কথা হলে প্রধান শিক্ষক জানান, রুটিন মেইনটেন্যান্সের ৪০ হাজার টাকা ও স্লিপের ৫০ হাজার মোট ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ভ্যাট ও আইটি বাদে পাওয়া গিয়েছে ৭৮ হাজার তিনশত টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক তার মন গড়ানো ভাউচার তৈরী করে নামমাত্র অংশিক কাজ দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও দাতা সদস্য কাঞ্চন কুমার রায় জানান, প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার এই বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে একক কতৃত্ব চালিয়ে আসছেন। বাস্তবে শিক্ষার্থীও সংখ্যা শুন্যের কোঠায়। বিদ্যালয়কে টিকিয়ে রাখার জন্য শুধু মাত্র খাতা কলমে হাজিরা খাতা রাখা হয়েছে। এছাড়া সরকারিভাবে বরাদ্দ পেলে টাকা উত্তোলনের পর কোনো কাজ না করেই তিনি শিক্ষা অফিসকে ম্যানেজ টাকা আত্মসাৎ করেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার বলেন, কিছু কাজ তো করেছি। শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে না আসলে আমার কি করার আছে। ভর্তি হয়ে আমার স্কুলের নামে টাকা তারা ঠিকেই তুলছে কিন্তু আমার স্কুলে তারা এখন না এসে মাদ্রাসা ও কেজি স্কুলে পড়তেছে। উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা এবং ওই বিদ্যালয়ের দায়িত্বরত সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক জানান, সরকারের বরাদ্ধকতৃ টাকা কাজ না করে কেউ নিজের পকেটে রাখতে পারেন না। অবশ্যই কাজ কাজ করতে হবে।