দিনাজপুর প্রতিনিধি:
ছাত্রলীগের প্রথম সভাপতি ও ভাষাসৈনিক এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর প্রয়াত অ্যাডভোকেট দবিরুল ইসলাম এমএলএর স্ত্রী আবেদা খাতুন হেনা দিনাজপুর জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি........রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮৭ বছর। বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছাড়াও তার কিডনির সমস্যা ছিলো বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। গত ২৬ আগস্ট দিনাজপুর জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পারিবারিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে দিনাজপুর জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, আজ রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বামুনিয়া গ্রামে পরিবারিক গোরস্তানে মরহুমা আবেদা খাতুন হেনার দাফনকাজ সম্পন্ন হবে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাযায়, ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পর ১৯৪৯ সালের ৪ জানুয়ারি প্রথম কাউন্সিল অধিবেশনে দবিরুল ইসলাম সংগঠনের সভাপতি (১৯৪৯-১৯৫৩) নির্বাচিত হন। সেই সময় তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ ছিলেন। দবিরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন অন্যতম সদস্যও ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহপাঠী দবিরুল ইসলামকে চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের আন্দোলনে যুক্ত থাকার অভিযোগে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে তিনি ঠাকুরগাঁও থেকে এমএলএ নির্বাচিত হন। দবিরুল ইসলাম ১৯৫৬ সালে আবু হোসেন সরকারের নেতৃত্বে গঠিত মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় শিল্প, বাণিজ্য ও শ্রমবিষয়ক পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি নিযুক্ত হন। জেলে পাকিস্তান সরকারের নির্মম নির্যাতনের কারণে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়তেন দবিরুল ইসলাম। এ অবস্থায় ১৯৬১ সালের ১৩ জানুয়ারি মাত্র ৩৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন বঙ্গবন্ধুর এই ঘনিষ্ঠ সহচর।
বিয়ের মাত্র ১০ বছরের মাথায় ভাষাসৈনিক এবং বঙ্গবন্ধুর সহপাঠী ও বিশ্বস্ত সহচর দবিরুল ইসলামের মৃত্যুর পর চরম প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে ৪ সন্তানকে (এক মেয়ে ও তিন ছেলে) বড় করেন তার বিধবা স্ত্রী আবেদা খাতুন হেনা। বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুস্থ্যতার কারনে গত ২৬ আগস্ট তাকে দিনাজপুর জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।