ঘোড়াঘাটে রোগীর শরীরে অন্য গ্রুপের রক্ত পুশ করার অভিযোগ

আমাদের প্রতিদিন
2024-10-01 05:05:35

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সের দায়িত্বের অবহেলায় রোগীর শরীরে অন্য গ্রুপের রক্ত পুশ করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভুক্তভোগী রোগীর স্বামী বাদী হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল আনোয়ার বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভুক্তভোগী রোগীর স্বামী উপজেলার আবিরের পাড়া গ্রামের বাসিন্দা রাসেল মিয়া এ অভিযোগ দাখিল করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ সেপ্টেম্বর সোমবার রাসেল মিয়ার স্ত্রী শহর বানু (২৪) কে শরীর দূর্বল ও রক্ত শূন্যতার কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শে রোগীর শরীরে রক্ত প্রদান করার সিদ্ধান্ত হলে নির্দিষ্ট রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী অনেক খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে একজন পরিচিত রক্তদাতা খোঁজ পেয়ে গত মঙ্গলবার হাসপাতাল সংলগ্ন ওয়েলকাম ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে গিয়ে এবি পজিটিভ গ্রুপের রক্ত সংগ্রহ করে কর্তব্যরত নার্সকে হাসপাতালে রক্ত সংরক্ষণ করতে বলা হলে তিনি উক্ত ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে রক্ত রাখার পরামর্শ দেন। পরের দিন ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার রক্ত আনতে বললে বাদী অনেকটা অসুস্থ ও তার কোনো অক্ষর জ্ঞান না থাকায় রক্তের ব্যাগ এনে দিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স রক্তের গ্রুপ নির্ণয় না করে এমনকি ক্রসম্যাচিং না করে এবি পজিটিভ রক্তের পরিবর্তে বি পজিটিভ গ্রুপের রক্ত রোগীর শরীরে পুশ করেন। এমতাবস্থায় অর্ধেক রক্ত রোগীর শরীরে প্রবেশ করার পর বাদীর ছোট ভাই সোহেল রানা বিষয়টি লক্ষ্য করে নার্স কে জানালে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা তড়িঘড়ি করে ভুল গ্রুপের রক্তের গ্রুপের ব্যাগটি লুকিয়ে ফেলে। কিন্তু এর আগেই রোগীর ভাই বিষয়টি মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখেন।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী রোগীর স্বামী রাসেল মিয়া জানান, ভুল রক্ত পুশ করার কিছুক্ষণ পর রোগীর শরীরে চুলকানো সহ কোমরের ব্যথা শুরু হয়। আমি একজন অতি দরিদ্র ব্যক্তি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসা করা আমার পক্ষে অনেকটা অসম্ভব। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সহ রোগীর উন্নত চিকিৎসার দাবি করছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) নূর ই আজমীর ঝিলিক  অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমরা রোগীকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছি। রোগী বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে।

এ ব্যাপারে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল আনোয়ার এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়। ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ শয্যার একটি হাসপাতাল। এখানে রক্ত সঞ্চালনের অনুমতি থাকলেও ক্রসম্যাচিং এর অনুমতি নেই। তাই অনুমোদনকৃত প্রতিষ্ঠান হতে ক্রসম্যাচিং করা বাধ্যতামূলক।

ক্রসম্যাচিং করার ৮ ঘন্টার মধ্যেই রক্ত পরিসঞ্চালন করতে হবে। নতুবা পুনরায় ক্রসম্যাচিং করতে হয়। এ ঘটনায় রক্ত কোথায় ক্রসম্যাচিং করা হয়েছে। কারা এর জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।