রংপুরে ওয়াকার্স পার্টির নেতার বাড়ি দখলের চেষ্টা: হামলা-ভাঙচুর

আমাদের প্রতিদিন
2024-07-27 06:33:12

অর্ধ কোটি টাকার মালামাল লুটপাট, নিরাপত্তাহীনতায় পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে রংপুর নগরীতে ওয়াকার্স পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র প্রার্থী কাজী মাজিরুল ইসলাম লিটনের বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় ব্যাপক হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার মালামাল লুটপাটসহ আরো কয়েক লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন হয়। হামলায় এক আইনজীবীসহ ৪জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হলেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ এখনো কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে মামলায় আসামি হিসাবে যাদের নাম রয়েছে তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে বাদী জানায়। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ওয়াকার্স পার্টির নেতা লিটনসহ তার পরিবার। তারা বর্তমানে অন্যের বাড়িতে আশ্রিতা হিসাবে দিনানিপাত করছেন।

থানায় লিখিত অভিযোগ, ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীরা জানায়, রংপুর মহানগরীর আলমনগর স্টেশন রোডস্থ শাপলা চত্বর এলাকায় পৈত্রিক বসতবাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন ওয়াকার্স পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র প্রার্থী কাজী মাজিরুল ইসলাম লিটন। উক্ত বসতবাড়িটি স্থানীয় বাসিন্দা  নাজমুল করিম ডলার অবৈধভাবে দাবি করে আসছেন। ইতিপূর্বে ডলারের পিতা শামসুদ্দিন আহমেদ কাজী মফিজ উদ্দিন আহমেদকে ভাড়াটিয়া হিসাবে অবৈধ দখলাদার চিহ্নিত করে আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি খারিজ করে দেয় এবং আমার পিতার পক্ষে রায় প্রদান করেন। পরবর্তীতে মামলাটির বিরুদ্ধে ডলারের পিতা শামসুদ্দিন আহমেদ হাইকোর্টে রিভিউ মামলা দাযের করেন। যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়াও মো. দানেশ নামের একজনকে বাদী করে জমির মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করা হলেও আদালত উক্ত মামলায় লিটনের পিতা কাজী মফিজ উদ্দিন আহমেদের পক্ষে রায় দেয়। এরপর থেকে নাজমুল করিম ডলার তার লোকজন নিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে, যার কারণে নিরপাত্তার জন্য কোতয়ালী মেট্রোপলিটন থানায় জিডি করেন।

এরই মধ্যে গত শনিবার বিকেল ৩টার দিকে বসতবাড়িটি নিজের বলে দাবি করে নাজমুল করিম ডলারের নেতৃত্বে রফিকুল আলম, শরীফ খান, মুরাদ হোসেন ও তমালসহ দেড় শতাধিক লোকজন রামদা,ছুরিসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে লিটনের বাড়ির মুল গেট ভাঙচুর করে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে। এতে তার স্ত্রী শামীমা ইয়াছমিন ও ছেলে ঋণ তাদের বাধা দিলে হামলার তারা হামলার শিকার হন। তাদের ব্যাপক মারধর করা হয়। এসময় বাড়ির নগদ ১৮লক্ষ টাকা, সাড়ে ১৬ লক্ষ টাকার স্বর্ণালংকারসহ ল্যাপটপ, মোবাইল, বাড়ির এঙ্গেলযুক্ত ছাদসহ বিভিন্ন রকম মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। ভাঙচুর করা হয় বাড়ির আসবাবপত্রসহ মালামাল। এতে কয়েক লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়। পরে এক পর্যায়ে আসামিরা ওয়ার্কাস পার্টির নেতা কাজী মাজিরুল ইসলাম লিটনসহ তার স্ত্রী ও ছেলেকে জোর পূর্বক বাড়ি হতে টেনে হেঁচড়ে বের করে পার্শ্ববর্তী মুরাদ মেশিনারিজ নামক প্রতিষ্ঠানে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এসময় খবর পেয়ে তার বোন জামাই সিনিয়র আইনজীবী উৎপল আদনান ইসলাম আসলে আসামিরা তাকেও মারধর করেন। এতে তার মুখ ও ঠোঁট ফেটে রক্তাক্ত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে ওয়াকার্স পার্টির নেতা লিটনসহ তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। পরিবার নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এব্যাপারে কাজী মাজিরুল ইসলাম লিটন বাদী হয়ে কোতয়ালী মেট্রোপলিটন থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ্য পূর্বক অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে বাদী জানিয়েছেন। তবে মামলা দায়ের হলেও পুলিশ এখন কোন আসামি গ্রেফতার করতে পারেনি বলেও বাদীর অভিযোগ । এব্যাপারে কোতয়ালী মেট্রোপলিটন থানার ওসি মাহফুজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।