পীরগাছায় গরু ব্যবসায়ী ফরেস হত্যার অভিযোগে চার আসামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড

আমাদের প্রতিদিন
2024-08-28 15:14:39

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় গরু ব্যবসায়ী ফিরোজ মিয়া ফরেস হত্যা মামলায় ৪ আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরে রংপুরের জেলা ও দায়রা জজ শহিদুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষনার সময় আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলো। পরে তাদের পুলিশী পাহ্রাায় আদালতের হাজত খানায় নেয়া হয়।

আদালত ও মামলার বিবরণে জানা গেছে, রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কান্দি কাবিলপাড়া গ্রামের আমিন মিয়ার ছেলে ফিরোজ মিয়া ফরেস গরু ছাগলের ব্যবসা করতো। ২০১৯ সালের ৭ ফ্রেরুয়ারী তারিখে দুপুরে ফরেস মিয়া স্থানীয় চৌধুরানী হাটে ছাগল বিক্রি করে তার বাসায় আসে। এর পর আবারো সন্ধার সময় আবারো বাইরে যায়। এরপর সে চৌধুরানী বাজারে জনৈক কাশিনাথের চায়ের দোকানে নাস্তা আর চা পান করে। এরপর সে আর বাসায় ফিরে আসে নাই। দুদিন ধরে স্বজনরা অনেক খোজাখুজি করেও কোন সন্ধান পায় নাই। এ ঘটনায় ৯ ফেরুয়ারী তারিখে পীরগাছা থানায় জিডি করে তার বাবা আমিন মিয়া। এরও দুদিন পর ১১/২/২০০৯ ইং তারিখে স্বজনরা জানতে পারে কাবিলপাড়া গুচ্ছ গ্রামে বালুর স্তুপের মধ্যে একটি মৃত দেহ পড়ে আছে। স্বজনরা সেখানে গিয়ে ফরেস মিয়ার মরদেহ সনাক্ত করে। খবর পেয়ে  পীরগাছা থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে এসে নিহত ফরেস মিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহত ফরেস মিয়ার বাবা আমিন মিয়া বাদী হয়ে পীরগাছা থানায় অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে প্রথমে একই গ্রামের শাহিন মিয়া ও জাহিদুল ইসলামকে  আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা দুজনই ফরেস মিয়াকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে। তারা আরও দুই সঙ্গি সাজেদুল ও কাল্টু মিয়ার নাম জানায়। পুলিশ শাহিন মিয়া ও জাহিদুল ইসলামকে আদালতে হাজির করলে তারা ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করে।

মামলাটি তদন্ত শেষে পীরগাছা থানার ওসি তদন্ত আজিম উদ্দিন ৪ আসামী শাহিন মিয়া , জাহিদুল ইসলাম, সাজেদুল ইসলাম ও কাল্টু মিয়ার বিরুদ্ধে ৩/০৭/২০১৯ইং তারিখে আদালতে চার্জসীট দাখিল করে। মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আসামী ৪ জনকে দন্ডবিধি ৩০২ ধারায় দোষি সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার করে জরিমানা এবং লাশ গুম করার অপরাধে ২০১ ধারায় আরো ৫ বছর কারাদন্ডের আদেশ দেন। বিচারক উভয় দন্ডই এক সাথে কার্যকর হবে এবং তারা যতদিন ধরে কারাগারে আটক আছে সে সময়টা সাজা থেকে বাদ যাবে বলে রায়ে উল্লেখ করে।

সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবি পিপি আব্দুল মালেক এ্যাডভোকেট জানান, এ রায়ে তারা সন্তোষ প্রকাশ করছে সেই সাথে ন্যায় বিচার পেয়েছে বলে জানায়। তবে রায় ঘোষনার সময় আসামী পক্ষের কোন আইনজীবি উপস্থিত না থাকায় তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।