নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে শুরু হয়েছে তাবলিগ জামাতের তিন দিনব্যাপী জেলা ইজতেমা। বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর মহানগরীর আলমনগর স্টেশন রোডে আরডিসিসিএস মাঠে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ইজতেমার কার্যক্রম। কোরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে আল্লাহ ও নবী-রাসুলের হুকুম-আহকাম মেনে চলার মধ্যেই ইহকাল ও পরকালে সুখ-শান্তি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তারা।
বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি ও হরতাল-অবরোধের মতো পরিস্থিতি এবং হালকা শীত উপেক্ষা করে বিশাল আয়তনের এ মাঠে দূর-দূরান্ত থেকে আসা প্রায় এক লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি শামিয়ানার নিচে অবস্থান নেন। এর মধ্যে আরডিসিসিএস সংলগ্ন ১০টি খিত্তার নিচে একসঙ্গে ৫০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। ২০১০ সাল থেকে রংপুরে ইজতেমা হয়ে আসছে। এবার রংপুরে অষ্টমবারের মতো ইজতেমা হচ্ছে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, বুধবার সকাল থেকেই রংপুর জেলাসহ আশপাশের এলাকা থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ ইজতেমা ময়দানে সমবেত হতে শুরু করেন। এখানে রংপুর মহানগর ও সদর উপজেলাসহ তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ, গঙ্গাচড়া, মিঠাপুকুর, পীরগঞ্জ, পীরগাছা এবং কাউনিয়া উপজেলার তাবলিগ জামাতের অনুসারীরা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা আসছেন। ইজতেমায় রাজধানী ঢাকা ছাড়াও ইতোমধ্যে মরক্কো, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়াসহ চারটি দেশের তাবলিগের জামাতের বিদেশি মেহমানরা ময়দানে উপস্থিত হয়েছেন। পরবর্তীতে মাশোয়ারার ভিত্তিতে আগত আলেমগণ বয়ানের মাধ্যমে দ্বীনের দাওয়াতে উদ্বুদ্ধ করবেন। ঢাকা থেকেও মুরব্বিরা উপস্থিত হয়েছেন ইজতেমার মাঠে। বিদেশি মেহমানরাও রয়েছে।
এদিকে ইজতেমায় অংশ নেওয়া বিদেশি মেহমান, মুরুব্বি এবং মুসল্লিদের সেবায় কয়েক শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া দূরের মুসল্লিদের পরিবহন রাখার জন্য গ্যারেজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাঠের আশপাশে শতাধিক খাবারের দোকান বসানো হয়। সহস্রাধিক বাথরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাঠ সমান করাসহ বিভিন্ন সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে রংপুর সিটি কর্পোরেশন।
ইজতেমা মাঠসহ আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবীরা নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তুলেছেন। র্যাব, পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাসহ পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে চার স্তরের নিরাপত্তা-ব্যবস্থা রয়েছে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরাও। পুলিশের কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।এছাড়া ইজতেমা সফল করতে প্রায় কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবী সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে স্পেশাল স্বেচ্ছাসেবক দল। এবারও ইজতেমায় যৌতুকবিহীন ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক কয়েকজনের বিবাহ সম্পন্ন হবে। আগামী শনিবার বেলা ১২টার মধ্যে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে ইজতেমার কার্যক্রম শেষ হবে। মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার জন্য এখান থেকে চিল্লার উদ্দেশ্যে কয়েক হাজার মুসল্লি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাবেন।