দিনাজপুর প্রতিনিধি:
বিয়ের দেওয়ার কথা বলে প্রেমিক-প্রেমিকাকে জোরপুর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে প্রেমিককে অন্যত্র তাড়িয়ে দিয়ে প্রেমিকাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১ টায় দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা শহরের তেলীপুকুর এলাকার নির্মাণাধীন একটি ভবনের পেছনে। ধর্ষনের শিকার প্রেমিকা দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং প্রেমিক চিরিরবন্দর থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
ধর্ষনের শিকার ওই প্রেমিকা (১৮) এর বাড়ী চিরিরবন্দর উপজেলার খালপাড়া গুচ্ছগ্রাম এলাকায় এবং প্রেমিক মাসুদ রানা (২৪) পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাগুড়া এলাকার অধিবাসী।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ধর্ষিতা তরুনী (প্রেমিকা) জানান, মাসুদ রানার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। মঙ্গলবার সকালে মাসুদ রানা পঞ্চগড় থেকে চিরিরবন্দরে তাদের বাসায় আসে। তরুনীর মা-বাবার কাছে বিয়ের কথা জানায়। কিন্তু তরুনী পরিবার এ বিয়েতে সম্মতি না দেওয়ায় রাত সাড়ে নয়টায় মাসুদের হাত ধরে বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রথমে চিরিরবন্দর রেলস্টেশনে আসে। পঞ্চগড় আসার কোন ট্রেন না পাওয়ায় হাঁটাপথে উপজেলার ঘুঘরাতলী এলাকায় বটগাছের নিচে বসে ইজিবাইকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। স্টেশন থেকে দুটি ছেলে ওই প্রেমিক-প্রেমিকাকে অনুসরন করে তাদের পিছু নেয়।
রাত ১০টায় পিছু নেওয়া ছেলে দুটি ঘুঘরাতলীতে এসে অপেক্ষমান প্রেমিক-প্রেমিকার গন্তব্যের কথা জানতে চায়। ঘটনাস্থলে তাদের সাথে যোগ হয় আরও তিনজন (মাস্ক পড়া) সব কথা শুনে একজন তাদের বলেন, ‘তোমরা পালায় যাচ্ছো কেন? তোমরা যদি বিয়ে করবা আমরা তোমাদেরকে বিয়ে দেব। তোমরা চলো আমাদের সাথে।’ জবাবে তরুনী তাদের বলেন, ‘ভাইয়া আমরাতো বিয়ে ম্যানেজ করেই ফেলছি, আমরা নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারি। আপনারাতো আইনের লোক না। আমাদেরকে কি হেল্প করবেন।’ একথা শুনে তাদেরকে মারধর শুরু করে পরে একটি রিক্সা ভ্যানে জোরপূর্বক তুলে নেন সাথে তরুনীর মুঠোফোন কেড়ে নেন। পরে তাদেরকে এলএসডি সংলগ্ন একটি নির্মানধীন ভবন এ নিয়ে যান।
সেখানে উভয়কে মারধর শুরু করে প্রেমিক মাসুদকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে তরুনীকে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যায়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তরুনীকে ধাক্কা দিলে সে ধানক্ষেতে পড়ে যায়। তার পা ফ্র্যাকচার হয়ে যায়। এ সময় সবাই ধানক্ষেতে নেমে তরুনীকে পালাক্রমে ধর্ষন করে। পরে পাশের একটি ধানক্ষেতে শুইয়ে রেখে ধর্ষিতা তরুনীকে তার ফোনটি দিয়ে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে বাড়ি চলে যেতে বলেন।
এদিকে বিষয়টি অবহিত করে প্রেমিক মাসুদ রানা জরুরীসেবা ৯৯৯ এ ফোন দেন। পুলিশ রাত আড়াইটায় ঘটনাস্থল থেকে ধর্ষনের শিকার তরুনী ও মাসুদ রানাকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে চিরিরবন্দর থানার ওসি বজলুর রশিদ জানান, তরুনীর বোন সালমা আক্তার বাদী হয়ে বুধবার রাতে চিরিরবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। প্রেমিক মাসুদ রানার জবানবন্দী নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে এবং আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।