দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দরে যাত্রীবাহী বিআরটিসি’র বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় নিহত হয়েছে দাঁড়িয়ে থাকা দুই ভ্যানচালকসহ ৪ জন। এতে আহত হয়েছে অন্তত ৭ জন। এই দুর্ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় রানীরবন্দর বাজারে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি বটতলী এলাকার খোচামুদ্দিনের ছেলে ভ্যানচালক আব্দুল মজিদ (৫০) ও একই উপজেলার গোয়ালডিহি প্রাণবাজার এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে ভ্যানচালক নজরুল ইসলাম নজু (৪৫), কক্সবাজারের টেনকাফ উপজেলার হটিখোলা এলাকার মৃত মনসু চাকমার ছেলে নত্তা ইয়াং চাকমা (৫২) ও একই এলাকার ইশ এসং চাকমার ছেলে সাইওঙ্গো চাকমা (৪৫)। নিহত চাকমা দু’জন সম্পর্কে চাচা—ভাতিজা। স্থানীয়রা জানিয়েছে, তারা মধু বিক্রি করতে এসেছিলো রানীরবন্দর বাজারে।
আহতদের মধ্যে বান্দরবন আলী কদম এলাকার প্রদীপ চাকমা (৩৫), মোটর সাইকেল চালক আব্দুর রাজ্জাক, রাণীরবন্দরের সাইফুল ইসলামের কন্যা (অজ্ঞাত) স্কুল ছাত্রীসহ আরো ৭ জনের অধিক। এরমধ্যে আহত স্কুল ছাত্রী গুরুত্বর আহত অবস্থায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অন্যান্য আহতদের স্থানীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার সকালে একটি যাত্রীবাহী বিআরটিসির বাস দিনাজপুর থেকে রংপুর যাচ্ছিলো। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাসটি চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর বাজােও পৌছলে সেখানে দাড়িয়ে থাকা মিনিবাসকে উল্টো দিকে বেপরোয়াভাবে ওভারটেক করে। এতে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি রিক্সাভ্যানকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় ২’শ মিটার ঠেলে নিয়ে যায়। এসময় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ৩ জন মধু ব্যবসায়ীও বেশ কয়েকজন দাড়িয়ে থাকা মানুষকেও ধাক্কা দেয় বাসটি। এসময় ফলে ভ্যানে বসে থাকা ২ ভ্যানচালক ও রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ২ মধু ব্যবসায়ী বাসের নীচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
এই দুর্ঘটনার পর বিকট শব্দ শুনে স্থানীয়রা বাজারে ছুটে আসেন। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা প্রায় তিন ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। স্থানীয়রা বিআরটিসি’র বাসটিকে আটক করলেও বাসের চালক ও হেল্পার পালিয়ে যায়। এই দুর্ঘটনার পর তিন ঘন্টা মহসড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
এদিকে দুর্ঘটনার পর রানীরবন্দরে ছুটে যান চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম শরিফুল হক, চিরিরবন্দর থানার ওসি আবুল হাসনাত. দশমাইল হাইওয়ে থানা ওসি মোস্তাফিজুর রহমান ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম শফিফুল হক জানান, হতাহতদের আর্থিকভাবে অনুদান দেয়া হচ্ছে।
চিরিরবন্দর থানার ওসি আবুল হাসনাত জানান, মরদেহ চারটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আটক বাসটি দশমাইল হাইওয়ে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। সকালে সাড়ে ১০ টায় যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেয়া হয়েছে