বেরোবি প্রতিনিধি:
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষার্থীকে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় রাব্বী নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। অপহরণকারী রাব্বীর বাড়ি নগরীর লালবাগ কলেজপাড়া। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে এই ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। চক্রের অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, নগরীর লালবাগ থেকে অটোরিকশায় পার্কের মোড়ে আসার পথে কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে তিন সদস্যের একটি দল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেনকে। পরে কোমরে ছুরি ঠেকিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে পরিবারের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেন অপহরণকারীরা।
লালবাগ থেকে পার্কের মোর পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়কে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের শতাধিক মেস ছাড়াও প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ চলাফেরা করেন। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে নিরাপত্তা নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, আগে লালবাগ-পার্কের মোড় সড়কটিতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও এখন বিভিন্ন কৌশলে করা হচ্ছে অপহরণ। এমন ঘটনায় প্রশাসনের নীরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। গত ৬ মাসে এই সড়কটিতে ছয়টি ছিনতাই ও অপহরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান স্থানীয় ও শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমি লালবাগ থেকে অটোতে উঠি পার্ক মোড়ে যাওয়ার জন্য। অটোরিকশায় চালকসহ আরও চারজন ছিল। একটু সামনে যাওয়ার পর দুপাশে দুজন চেপে ধরে কোমরে ছুরি ধরে চুপ থাকতে বলেন। তারপর অটোরিকশা ঘুরিয়ে রংপুর মুলাটোল এলাকায় এনে আমার কাছে যা টাকা পয়সা ছিল কেড়ে নেন এবং বন্ধু বান্ধব যারা আছেন তাদের ফোন করতে বলেন। এরপর কয়েক জায়গায় ফোন দিয়ে বিকাশে ১৫ হাজারের মতো টাকা দিলে তারা আমাকে ছেড়ে দেয়।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন জানান, জনগণের জানমাল নিরাপত্তার পাশাপাশি অপরাধীদের ধরতে অভিযান চলছে। এরই মধ্যে রাব্বী নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার (৩০ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে লালবাগ থেকে অটোরিকশায় করে পার্ক মোড়ে আসার পথে কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষা বর্ষের (১৫ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেনকে। পরে রংপুর শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে ১৫ হাজার টাকা আদায় করে ছেড়ে দেয়া হয়।