রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) এক ছাত্রলীগ নেতার রুম দখল ও 'রাজশাহীতে পা দিলে তার লাশ খুঁজে পাওয়া যাবে না' এমন হুমকির অভিযোগ উঠেছে বর্তমান কমিটির এক দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। হত্যার অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করতে দেখা যায় ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতাকে।
ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা হলেন, তাজবিউল হাসান অপূর্ব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাহ্ মখদুম হল শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী ছিলেন।
এদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হলেন, মো. মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি হবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও হলের বর্তমানে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। মিনহাজুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।
এ ঘটনা ছাড়াও মিনহাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সাথে যুক্ত আছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তেলাপোকার ভয় দেখিয়ে পাঁচ বছর ধরে ক্যান্টিনে ফ্রিতে খাওয়া, সিট থেকে বৈধ শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দেওয়া এবং চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে তার বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত যথাযথ কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে।
ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেন, আমি দীর্ঘদিন হল ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। গত ৩-৪ মাস কিছু কারণে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত আছি। দীর্ঘ সময় রাজনীতি করার ইচ্ছে থাকলেও নোংরা রাজনীতির কারণে সেটি সম্ভব হয়নি।
আমার মাস্টার্সের পরীক্ষা ২টা হয়েছে, ৩টা পরীক্ষা এখনো বাকি। গতকাল ঢাকাতে এসেছি পারিবারিক সমস্যার কারণে। পরীক্ষা শেষ হলে এমনিতেই চলে যেতাম। পরীক্ষা শেষ না হতেই আমার রুম দখল। আমাকে হত্যার হুমকি দেয় আমি রাজশাহী পরীক্ষা দিতে আসলে আমার লাশ ও খুজে পাওয়া যাবেনা। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক!
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আমি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। বর্তমান শাহ্ মখদুম হল ছাত্রলীগের সভাপতি, তারপরও আমার সাথে নবগঠিত ছাত্রলীগ নেতাদের এমন আচারণ আশা করিনি। খুব তাড়াতাড়ি সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তুলে ধরে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করবো। ভালো থাকুক আমার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা অপূর্ব বলেন, "আমার পড়াশোনা শেষ না হতেই মিনহাজের নেতৃত্বে আমার রুমে তালা মারা হয়। এ নিয়ে আমি মিনহাজকে কল দিলে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয় সে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতির হয়ে সকল হলের নেতৃত্বে দিচ্ছি, আমি যা চাই তাই করতে পারবে বলে আমাকে জানায় মিনহাজ। আমি এ নিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ভাইকে কল দিলে, উনিও উল্টো মিনহাজের হয়ে কথা বলেন এবং বিষয়টি কোন পর্যন্ত যায় তিনি দেখবেন বলে আমাকে হুমকি দেন। এক পর্যায়ে মিনহাজ আমাকে পরীক্ষা দিতে আসলে হত্যার হুমকি দেয়। এ নিয়ে রাজশাহীতে এসেই সংবাদ সম্মেলন করবো বলে জানান তিনি।"
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মিনহাজুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনার সাথে আমার কোনো রকম সংশ্লিষ্টটা নেই। যদি সে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেই থাকে তাহলে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, "আমি বিষয়টি নিয়ে পুরোপুরি অবগত না, তবে কিছুটা শুনেছি। আমি ক্যাম্পাসের বাহিরে আছি। ক্যাম্পাসে গিয়ে বিষয়টি শুনে সমাধান করার চেষ্টা করবো বলে জানান তিনি।"