রংপুর সার্কিট হাউস নির্মিত হচ্ছে অত্যাধুনিক ভবন

আমাদের প্রতিদিন
2024-10-07 17:12:27

নির্মাণ ব্যয় ৩৬ কোটি ২১ লাখ ২৮ হাজার টাকা

                  ৬ তলা ভবনের ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সরকার প্রধানসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আবাসন সংকট নিরসনের জন্য ৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে রংপুরে নির্মিত হচ্ছে সার্কিট হাউসের নতুন অত্যাধুনিক ভবন। ইতোমধ্যে ৬ তলা ভবনটির ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এই ভবনটির উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন রংপুর গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীরা।

রংপুরের পুরাতন সার্কিট হাউসের পিছনে দৃষ্টিনন্দন ভবনটি নির্মাণ করা হলেও ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে থাকা পুরোনো সার্কিট হাউসটিও ব্যবহার করা হবে অতিথিদের আবাসনের জন্য।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা জানান, রংপুরের পুরাতন সার্কিট হাউসটি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত। রংপুরে তিনি যতবার এসেছেন এখানেই উঠেছেন। তাই পুরোনো ভবনটি রেখে নতুন ভবন নির্মাণ করায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানান।

রংপুর গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকার প্রধানসহ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের আবাসন সংকট নিরসনের জন্য ২০২২ সালে একটি অত্যাধুনিক সার্কিট হাউস নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের এপ্রিল মাসে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ব্যয়ে নতুন সার্কিট হাউস ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ হলে চলতি বছরের অক্টোবর মাসে এর উদ্বোধন করা হবে। কাজ শেষ করতে নির্মাণ শ্রমিকেরা দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

রংপুর গণপূর্ত বিভাগের উপ—বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান জানান, ৫৪ হাজার ২০ বর্গফুটের নতুন এই সার্কিট হাউসের প্রথম তলায় রয়েছে হলরুম, ডাইনিং রুম, কিচেন ও অফিস কক্ষ। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে প্রেসিডেন্টশিয়াল স্যুট, ভিভিআইপি রুম। তৃতীয় তলায় রয়েছে— ২টি ভিভিআইপি স্যুট ও ৫টি ভিআইপি রুম। চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় রয়েছে— ১৮টি সাধারণ রুম। এছাড়াও জিম, লাইব্রেরি, নামাজ ঘরসহ ৫টি সাধারণ রুম রয়েছে ৬ষ্ঠ তলায়।

তিনি বলেন, প্রতিটি রুম ইন্টেরিয়র ডিজাইন ও আসবাপত্রগুলো হবে অত্যাধুনিক। থাকবে বিদ্যুতের সাবস্টেশন, পানির রির্জারভার, সালামি মঞ্চ, সড়ক, ড্রেনের ব্যবস্থা। নতুন এই সার্কিট হাউসে রয়েছে আধুনিক ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম। সার্কিট হাউসে আগত অতিথিদের নিরাপত্তার জন্য একটি চার তলা বিশিষ্ট পুলিশ ব্যারাকও নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক রংপুর গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী দেওয়ান মাউদুদুর রহমান জানান, বিভাগীয় শহর হিসেবে রাষ্ট্রপ্রধানসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা রংপুর সফরে এলে প্রধান সমস্য হয়ে দাঁড়ায় আবাসন সংকট। নতুন এই সার্কিট হাউস নির্মাণের ফলে আবাসন সংকট দূর হবে। সেই সাথে আধুনিক সুযোগ সুবিধা পড়েন রাষ্ট্রীয় অতিথিরা।

রংপুর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খন্দকার জানান, আশা রাখি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুমোদিত ব্যয় সীমার মধ্যে আমরা কাজ সমাপ্ত করতে পারব।

রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, আগের সার্কিট হাউসে দুটি ভিআইপিসহ মাত্র ৫টি রুম ছিল। যা একটি বিভাগীয় শহরের জন্য অপ্রতুল। নতুন এই সার্কিট হাউসের কার্যক্রম শুরু হলে আমরা অতিথিদের পর্যাপ্ত সেবা দিতে পারবো। আগে রংপুরে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এলে তাদের নিরাপত্তাসহ আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের অসুবিধার সম্মুখীন তো হতো। সেইটা থেকে আমরা মুক্ত হতে চলেছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।