নাগেশ্বরীতে বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় আদা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের পাশে থাকছে কৃষি বিভাগ
ডা. শেখ মো. নুর ইসলাম, নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম):
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় আদা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। বাড়ির আঙিনা, সুপারি বাগান, কলা বাগান, বাড়ির ছাদ, অনাবাদি ও পতিত জমিসহ বিভিন্ন জায়গায় বস্তায় মাটি ভরে কিংবা টবে আদা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের। অল্প পরিচর্যা আর কম খরচে এভাবে আদা চাষ করে সাবলম্বী হচ্ছে অনেক পরিবার। এছাড়াও আদা চাষে সেচ, কীটনাশক ও সার প্রয়োগসহ অন্যান্য খরচ কম হয় বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি আদার মূল্য ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ টাকা পর্যন্ত। বিয়ে, জন্মদিন, কুলখানি, আকিকাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের তরকারি ও খাবারের স্বাদ বাড়াতে আদার ব্যবহার করে থাকেন রাঁধুনীরা। এছাড়াও বিভিন্ন রোগে ওষুধী হিসেবেও ব্যবহার করা হয় আদা। তাই বাজারে আদার চাহিদাও অনেক বেশি।
উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের মাগুরমুড়া কানিপাড়া এলাকার কৃষক রিয়াজুল ইসলাম জানান, তিনি ৪০ শতক জমির ও কলা বাগানে ১ হাজার ৬শ বস্তায় আদা চাষ করেছে। বস্তা প্রতি উৎপাদন ব্যয় হয়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। প্রতিটি বস্তায় ২ থেকে ৩ কেজি আদার উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন তিনি। তিনি আরও জানান ইউটিউবে বস্তায় আদা চাষের ভিডিও দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে সুপারি বাগানে ও বাড়ির আঙ্গিনায় পরিত্যক্ত বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষ শুরু করেছেন। তার চাষাবাদ দেখে আশেপাশের অনেকের মাঝেই আদা চাষে আগ্রহ বেড়েছে। ওই ইউনিয়নের কইয়াপাড়া এলাকার বিজয় চন্দ্র ২শটি বস্তায় চাষ করছেন আদার। নাগেশ্বরী পৌরসভার পূর্ববাগডাঙ্গা (গুন্ডিরচর) এলাকার আবু বকর সিদ্দিক জানান, গেলো বছর সুপারি বাগানে পরীক্ষামূলক ১০টি বস্তায় আদা চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছেন। তাই এ বছর ৭০টি বস্তায় আদা চাষ করছেন। এছাড়াও বাড়ির আঙিনার পাশের প্রায় ৩শতক পরিত্যাক্ত্য জমিতে স্বাভাবিক নিয়মে আদা চাষ করছেন তিনি। তার দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে সেনপাড়া এলাকার প্রদীপ সেন তার বাড়ির বাউন্ডারির পাশের পরিত্যাক্ত জায়গায় ২শটি বস্তায় আদা চাষ করেছেন। এতে খরচও হয়েছে অনেক কম। ফলন ভালো হওয়ায় কয়েকগুণ লাভের আশা করছেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার শাহরিয়ার হোসেন বলেন, গত বছর ৯৫ হেক্টর জমিতে চাষ হলেও এ বছর ১শ ৩০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে আদার। মসলা জাতীয় এই আদার চাষে রোগবালাই নিরাময়সহ যাতে আদার ফলন ভালো হয়ে কৃষকরা লাভবান হয় সে ব্যাপারে কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।