চিলমারীতে টেকনিশিয়ানের অভাবে এক্স-রে সেবা থেকে বঞ্চিত রোগীরা, পুরনোটি নষ্ট নতুনটি প্যাকেট বন্দি
হাবিবুর রহমান, চিলমারী (কুড়িগ্রাম):
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এ এক্স-রে (মেশিন) সেবা থেকে বঞ্চিত চিলমারীর রোগীরা। বছরে পর বছর আসে, যুগের পর যুগ পেড়িয়ে গেলেও নষ্ট হয়ে আছে পুরানো মেশিনটি, নতুন মেশিনটি মাসের পর মাস থেকে প্যাকেট বন্দি অবস্থায় পরে আছে। বিভিন্ন রকম অযুহাত অন্য দিকে আবার টেকনিশিয়ান না থাকায় এই মেশিনের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চিলমারীবাসী। আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলে ও সেটি মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট এবং রেডিওগ্রাফি না থাকায় সেটির ও সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দিনের পর দিন চিলমারীবাসী। এ গুলোর প্রতিকারের নেই কোন তেমন উদ্যোগ, রয়েছে কর্তৃপক্ষের কিছু গাফলতি। পুরাতন এক্স-রে মেশিনটি মেতামতের অযুহাতে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা লোপাট। কোন উদ্যোগ গ্রহন ও পদক্ষেপ না নেয়ায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মাঝে ভোগান্তি বেড়েই চলেছে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দীর্ঘদিন থেকে নানান রোগে নিজেই আকান্ত হয়ে পড়েছে। ফলে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা মানুষের ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছে। সূত্র মতে উপজেলাবাসীর সেবার জন্য ২০০৭ সালে একটি উন্নত মানের এক্স-রে মেশিন স্থাপন করা হয়েছিল। মেশিনটি স্থাপন করার পর একজন টেশনিশিয়ান ও এই পদে যোগদান করেন। কিন্তু নানান জটিলতার সাথে অজ্ঞাত কারনে এখন পর্যন্ত চালু করা হয়নি এক্স-রে মেশিনটি। চালু করা না হলে ও উক্ত মেশিনটি মেরামতের নামে বিভিন্ন সময় লক্ষ লক্ষ টাকা দেখানো হয় কিন্তু এর পরে ও চালু হয়নি এক্স-রে মেশিনটি। মেরামতের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা দেখিয়ে কর্তৃপক্ষ নিজেরাই ভাগ-বাটোয়ারা করে লোপাট করেছে বলেও অভিযোগ উঠে, সেবা থেকে বঞ্চিত থেকেই যায় চিলমারীবাসী। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়ে প্রতিদিন পুরুষ, মহিলা ও শিশু গড়ে শতভাগ রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়। এছাড়া ও জরুরী বিভাগ ও আউটডোরে চিকিৎসা নেয় প্রায় ২শত থেকে ৩শত রোগী। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিলমারী উপজেলা ছাড়া ও পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার বজরা, তবকপুর, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কারেন বাজারসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের রোগীর আগমন ঘটে। এতে করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির রোগী বাড়লে ও এক্স-রে মেশিনের সেবার অভাবে রোগীরা স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে গিয়ে অনেক মূল্যে এক্স-রে করতে হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে রোগীদের ভোগান্তি অভাবনীয় পর্যায়ে পৌছুলে ও দেখার যেন কেউ নেই। এখানে নিয়োজিত এক্স-রে ম্যান টেকনেশিয়ান মোঃ সুলতান মিয়া দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করে, অবশেষে কাজের সন্ধানে বদলি হয়ে গেছেন অন্যত্র। পূর্বের এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট থাকায় আবারো নতুন করে গত কয়েক মাস আগে আরো একটি এক্স-রে মেশিন চিলমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হলে ও টেকনিশিয়ানের অভাবে সেটি ও প্যাকেটে বন্দি অবস্থায় পড়ে আছেন, কবে চালু হবে সেটি ও জানেন না কর্তৃপক্ষ। একদিকে আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলে ও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, রেডিওগ্রাফি পদটি শূন্য থাকায় সেবা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে চিলমারীসহ বিভিন্ন এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। কর্তৃপক্ষের গাফলতি আর উদাসিনতার কারনে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। সেই সাথে সেবা নিতে আসা রোগীদের ভোগান্তি বেড়েই চলছে বলে জানান চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। সেবা নিতে আসা মোনোয়ারা বলেন, এক্স-রে মেশিন আছে কিন্তু সেবা পাচ্ছিনা, বাহিরে থেকে পরীক্ষা করতে অনেক বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। হাসপাতালের মেশিন চালু হলে ডাক্তারের কমিশন কমবে মন্তব্য করে আমিনুল ইসলাম বলেন, সব সিন্ডিকেট ভাই, তাই তো দামি দামি মেশিন আসলে ও চালু হয়না। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাক্তার আমিনুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের পুরনো এক্স-রে মেশিনটি ভালো করা হয়েছে কিন্তু টেকনিশিয়ানের অভাবে এক্স-রে পুরনো ও নতুন মেশিনটি চালু করা যাচ্ছেনা, এছাড়া ও শূন্য রয়েছে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, রেডিওগ্রাফি পদটি। আমি এ বিষয়ে অনেক লেখা-লেখি করেছি কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না, তবে চেষ্টা করে যাচ্ছি দ্রুত সমস্যার সমাধানের জন্য বলে জানান তিনি।