বদরগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী
আঞ্চলিক প্রতিনিধি:
রংপুরের বদরগঞ্জে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় ট্রেনের নিচে ঝাপিয়ে পড়ে সুমনা আক্তার নামে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীর আত্নহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে আজ বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার টেকসেরহাট এলাকায় বদরগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাওয়া পার্বতীপুরগামী দোলনচাপা ট্রেনে । আশরাফগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল সুমনার আক্তারের। সে উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের টেকসেরহাট বিত্তিপাড়া এলাকার ফেরদৌস আলী ও রাশেদা বেগম দম্পত্তির মেয়ে। তবে পরিবারের দাবি মানসিক সমস্যার কারণে সে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত হয়েছে। ওইদিন বিকেলে তড়িঘড়ি করে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
এলাকাবাসী সুত্রে জানাগেছে, সম্প্রতি দশম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নিয়ে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিল সুমনা আক্তার। এরমধ্যে সুমনাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবারের লোকজন। বাল্য বিয়েতে কোনভাবেই রাজী ছিল না সে। তাকে বিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হলে ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার সকালের দিকে সবার অজান্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় সুমনা। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানাজানি হয় বদরগঞ্জ-পার্বতীপুর রেললাইনের টেকসেরহাট রেলসেতুর নিচে ট্রেনে কাটা পড়ে এক তরুনী আত্নহত্যা করেছে। পরে পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে সুমনা আক্তারের মরদেহ সনাক্ত করেন। পরে সেখান থেকে তার মরদেহ নিজ বাড়িতে আনা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী কৃষি শ্রমিক আতিকার রহমান ও শফিকুল ইসলাম বলেন, ট্রেন চলে যাওয়ার সময় দেখতে পাই সেতুর নিচে কে যেন পড়ে গেল। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই একটি মেয়ের দেহ ট্রেনে কাটা পড়ে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছে। পরে জানাজানি হয় মেয়েটির নাম সুমনা আক্তার। সে কি কারণে ট্রেনের নিচে কাটা পড়লো তা বলতে পারি না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই শিক্ষার্থীর বন্ধু-বান্ধবী ও এলাকাবাসীরা জানান, সুমনা আক্তার অসুস্থ ছিলেন না। যথা নিয়মে সকল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সে সফলতা অর্জন করে। তবে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে রাজী না হওয়ায় তার ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। এ কারণে হয়তো ক্ষোভে অভিমানে সে আতœহননের পথ বেছে নিয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে তার বাবা ফেরদৌস আলী ও মা রাশেদা বেগম বলেন, সুমনা আক্তার মানষিক রোগে ভুগছিল। তার চিকিৎসা চলছিল। স্থানীয় কবিরাজের কাছে তার চিকিৎসা নেওয়া হয়। এ সময় চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দেখতে চাইলে এ প্রতিবেদককে তা দেখাতে পারেননি তারা।
বদরগঞ্জ থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) মশিউর রহমান বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে রেললাইনে। এটার দায়িত্ব জিআরপি কর্তৃপক্ষের। আমাদের দায়িত্বে পড়ে না বিধায় আমরা কোন ব্যবস্থা নেইনি।
বদরগঞ্জ রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার রায়হানুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থল আমাদের রেঞ্জের বাইরে। তবে স্থানীয় মানুষের মুখে মুখে ঘটনাটি শুনেছি। এ নিয়ে আমাদের কাছে কোন খর আসে নাই।’