রংপুরে বিএনপির ৫০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরে হরতাল-অবরোধে নাশকতা সৃষ্টির পায়তারা, সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগসহ বিভিন্ন মামলায় পুলিশ অন্তত ৫০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। যাদের বেশির ভাগই রংপুর মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পদে আছেন। শনিবার সকালে রংপুর মহানগর বিএনপির মিডিয়া সেলে দেয়া এক বার্তায় গ্রেফতারের এ তথ্য জানান মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ জহির আলম নয়ন।
হরতালের (২৯ অক্টোবর) দিন থেকে শুরু করে অবরোধ শেষে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) রাত পর্যন্ত রংপুর নগরীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে ২৫ জনের নাম ও পদবি জানা গেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট মাহফুজ উন-নবী ডন, আহবায়ক কমিটির সদস্য কাওছার জামান বাবলা, রফিকুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম সবুজ, মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমরান খাঁন সুজন, সাবেক সহ-সভাপতি আবিদ হাসান গুড্ডু, ১৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের আহবায়ক রেজওয়ানুল ইসলাম নাহিদ, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আকিনুর ইসলাম, ২০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের আহবায়ক সাব্বির হোসেন আশিক, ২৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আশিকুর রহমান মিন্টু, ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক গোলাম রব্বানী রাব্বী, ৩০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক খোকন, ২৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক এরশাদ, বিএনপি কর্মী আলতাফ হোসেন লন্ডন, ২০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলকর্মী সাজিদ হোসেন মুন্না, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলকর্মী আনাস, ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপিকর্মী সিরাজুল ইসলাম, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি কর্মী জাহিদুল ও রফিকুল, ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি কর্মী মাকছুদার রহমান, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি কর্মী মাসুদ পারভেজ মজনু, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপিকর্মী আক্তার হোসেন, মোকতার হোসেন, জহুরুল ইসলাম ও ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপিকর্মী গজিয়ার রহমান।
এদের মধ্যে রংপুর জেলা পুলিশ হরতালের দিন ১১ জনসহ অবরোধের তিন দিনে ১৪ এবং শুক্রবার রাতে একজনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে সদর বিএনপি উপজেলা সদস্য আনিছুর রহমান, আমজাদ হোসেন, গঙ্গাচড়া বিএনপি সদস্য নাসির উদ্দিন, নয়া মিয়া, নুর আমিন, রুহুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর সদস্য আব্দুল জলিল মিয়া, মিঠাপুকুর জামায়াতে ইসলামীর সদস্য রেজাউল ইসলাম রাজু, সাইদুর রহমান লিটু, কাউনিয়া থেকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হাসান রায়হান রুশো, পীরগাছা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুর আহাদ মÐল রয়েছেন।
যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও রংপুর জেলার সভাপতি নাজমুল আলম নাজু’র অভিযোগ, সরকারবিরোধী আন্দোলন দমানোর লক্ষে পুলিশ গণগ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে।এতে রজনৈতিক নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নিরাপরাধ সাধারণ মানুষও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের অনেকেই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নন বলেও জানান তিনি।এছাড়াও নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশী করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
জেলা ও মহানগর পুলিশের তথ্য বলছে, হরতালের আগের দিন শনিবার রাত থেকে গতকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত (৭ দিনে) বিএনপি-জামায়াতসহ অঙ্গ সংগঠনের অন্তত ৫১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। েেগ্রফতারকৃতদের বিরুদ্ধে নাশকতা সৃষ্টির পায়তারা, অগ্নিসংযোগ, সরকারি কাজে বাধা প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।
রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, হরতালের শুরু থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত মহানগরের ছয়টি থানা এলাকা থেকে বিএনপি-জামায়াতের ২০-২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবও রয়েছে।
রংপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি এÐ মিডিয়া) মোঃ ইফতে খায়ের আলম বলেন, হরতালের দিন থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত রংপুর জেলার আটটি থানা এলাকা থেকে বিএনপি-জামায়াতের ২৬ জনকে েেগ্রফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নাশকতার পরিকল্পনা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে।