পীরগাছায় আদালত থেকে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে এসে স্বামী পলাতক : স্ত্রী-সন্তান অনাহারে থাকার অভিযোগ
পীরগাছা(রংপুর)প্রতিনিধি:
রংপুরের পীরগাছায় যৌতুক দাবির মামলায় স্ত্রী-সন্তানকে আদালত থেকে নিয়ে এসে বাড়িতে রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠছে বাদশা ওমর ফারুক নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এমনকি স্বামী, শ্বাশুরী ও ভাসুর গত দুদিন ধরে মা-মেয়েকে অনাহারে রেখে মানষিক নির্যাতনের অভিযোগ করছেন ভূক্তভোগী শাহনাজ পারভিন শাবনুর। এ ঘটনায় তিনি অসুস্থ্য মেয়ের চিকিৎসা ও স্বামীর অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি আহবান জানান।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের মকসুদ খাঁ গ্রামে শাহজাদা মিয়ার মেয়ে শাহনাজ পারভিন শাবনুর (২৪) এর সাথে বিগত ২০১৭ সালে ৩ এপ্রিল একই গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে বাদশা ওমর ফারুক (৩২) এর পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ফাতেমা আক্তার ফিহা নামে ৫ বছরের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। মেয়েটি দীর্ঘদিন থেকে থ্যালোমিয়া রোগে আক্রান্ত। তাকে প্রতি মাসে দুই ব্যাগ রক্ত দিতে হয়। গত ২০ জুলাই ২০২৩ তারিখে শাহনাজ পারভিন শাবনুর তার স্বামী, শশুর-শ^াশুড়ী এবং ভাসুরের নামে মারপিট, যৌতুক দাবি ও অসুস্থ্য মেয়েকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় গত ১০ অক্টোবর বাদশা ওমর ফারুক জামিন প্রাপ্ত হয়ে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। গত ১২ নভেম্বর দ্বিতীয় হাজিরায় আদালতে হাজির হলে তার স্ত্রী তাকে ঢাকায় নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত ৭ দিনের সময় দিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে বাড়িতে যাওয়ার নিদের্শ দেন। ওইদিন বাদশা ওমর ফারুক স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে এসে পরদিন সকালে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে গোপনে চলে যান। এতে করে তার স্ত্রী শাহনাজ পারভিন শাবনুর স্বামীকে খোঁজাখুজি করে জানতে পারেন যে, তার স্বামী পালিয়ে ঢাকায় চলে গেছে।
ভূক্তভোগী শাহনাজ পারভিন শাবনুর বলেন, আমার স্বামী আমাকে না বলে ঢাকায় পালিয়ে গেছে। আমি শ্বাশুড়ীর নিকট অসুস্থ্য মেয়ে ও নিজের খাবার চাইলেও কেউ খাবার দিচ্ছে না। আমাকে জোরপূর্বক বাবার বাড়িতে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি দুদিন থেকে অনাহারে। মেয়ের চিকিৎসা ও নিজের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন।
মেয়েটির পিতা শাহজাদা মিয়া বলেন, ছেলে (জামাই) মাদকাসক্ত। সে আমার মেয়েকে ২ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য নির্যাতন করছে। তার অসুস্থ্য মেয়ের চিকিৎসাও ঠিক মত করছে না।
মেয়েটির শ্বাশুড়ী মনোয়ারা বেগম বলেন, অনাহারে থাকার বিষয়টি মিথ্যা। আমার ছেলে ঢাকায় চাকুরি করে । সেখানে চলে গেছে।
বিষয়টি জানতে বাদশা ওমর ফারুকের মোবাইলে বেশ কয়েক বার ফোন দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার ভাই মামুনুর রশিদ উজ্জল বলেন, ফারুক চাকরির কারণে ঢাকায় চলে গেছে। তার সাথে আমরাও যোগাযোগ করতে পারিনি।