রংপুরে রিকশা কেড়ে নিতেই আলেফকে পরিকল্পিত হত্যা,গ্রেফতার-৪
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুর নগরীর বুড়াইল এলাকার চিলারঝাড় থেকে উদ্ধার করা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মরদেহের নেপথ্যের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন হয়েছে। এ ঘটনায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জড়িত আসামিদের গ্রেফতার করার পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামতও উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত আলেফ উদ্দিনের কাছ থেকে তার ব্যাটারিচালিত রিকশাটি কেড়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ ও মাদকদ্রব্য সেবনে অচেতন করে হত্যাকা-টি ঘটিয়েছেন আসামিরা। এঘটনায় ৪জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ রোববার দুপুরে আরপিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে রিকশাচালক আলেফ উদ্দিনের হত্যারহস্য উন্মোচন ও আসামিদের গ্রেফতারের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরপিএমপি) কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর চাঁদখানা গ্রামের নবাব আলীর ছেলে সম্রাট গোলজার (৩৫), রংপুর নগরীর কোবারু ডাক্তারপাড়ার মৃত ছইমুদ্দিনের ছেলে বকুল মিয়া (৫২), একই এলাকার মৃত জাহির উদ্দিনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (৩৮) এবং সদর উপজেলার মহেশপুর বালাপাড়া গ্রামের মৃত করিম উদ্দিনের ছেলে ভাংড়ি দোকানী ইউসুফ আলী (৩৭)।
মরদেহ উদ্ধারের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যারহস্য উন্মোচন করা হয়েছে উল্লেখ করে কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান জানান, ঘটনার এক সপ্তাহ আগে আসামিরা তাদের পূর্বপরিচিত ভিকটিম আলেফ উদ্দিনকে হত্যা করে তার ব্যাটারিচালিত রিকশা ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। এরই অংশ হিসেবে প্রথমে রংপুর সদরের লাহড়ীর হাটে এলাকায় তাকে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে আলেফ উদ্দিনকে হত্যার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর ভিকটিম আলেফ উদ্দিনকে হত্যা করে তার রিকশা নেওয়ার উদ্দেশ্যে ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভিকটিম আলেফ উদ্দিনকে চায়ের সঙ্গে ঘুমের ওধুষ খাওয়ান। তারপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে বুড়াইল বাজার চিলারঝাড় গ্রামের পাশের কয়ার দোলায় ফাঁকা জমিতে নিয়ে নেশা জাতীয় মাদকদ্রব্য গাঁজা সেবন করিয়ে অচেতন করেন। পরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দা দিয়ে প্রথমে গলা কেটে এরপর মাথা, হাত ও পায়ের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে আসামিরা।
আরপিএমপি কমিশনার আরও জানান, এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামে পুলিশ। রোববার ভোরে অভিযান পরিচালনা করে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র ও ভিকটিমের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া ব্যাটারিচালিত রিকশাটি একটি ভাংড়ির দোকান থেকে উদ্ধার করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।