কুড়িগ্রামে তীব্র ঠান্ডায় বীজতলা ও আবাদ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় কৃষকরা : ৭দিন থেকে সূর্যের দেখা নেই
কুড়িগ্রাম অফিস:
কুড়িগ্রামে ঘন কুয়াশা আর শীতের প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলছে। রাতভর বৃষ্টি মত ঝড়ে পড়া কুয়াশা আর দিনের বেলা হিম বাতাসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। টানা ৭দিন ধরে সূর্যের আলো না পাওয়ায় উত্তাপ নেই। তীব্র ঠান্ডায় কাজকর্মে বেড়েছে ভোগান্তি। কাজ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষজন।ফলে কাজের ফাঁকে শুকনো খড় জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন শ্রমিকরা। দেখা দিয়েছে শীতার্ত মানুষের শীতবস্ত্রের সংকট। মঙ্গলবার কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৮ডিগ্রী সেলসিয়াস।
এদিকে তীব্র শীতে বোরো আবাদ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।হীমের হাত থেকে রক্ষা পেতে অনেকে স্বচ্ছ সাদা রঙের প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখছেন বীজতলা।আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতিতে জমিতে চারা রোপনের সাহস পাচ্ছে না কৃষকেরা।
কথা হয় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙা হিন্দুপাড়া গ্রামের কৃষক আনিছুর রহমানের সাথে তিনি বলেন,বোরো আবাদের জন্য বীজতলার চারার পরিণত বয়স হয়েছে।কিন্তু প্রচুর ঠান্ডা ও কুয়াশার কারনে জমিতে চারা রোপন করতে পারছি না। এদিকে বীজতলাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।বাধ্য হয়ে প্লাস্টিক দিয়ে বীজতলা ঢেকে রেখেছি।
কৃষক মন্তাজ আলী বলেন,যে শীত পড়ছে কৃষি আবাদ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি।বিশেষ করে আলু ক্ষেত,বীজতলায় হীম ধরা শুরু করেছে।স্প্রে করও কোন কাজ হচ্ছে না।কি হবে আল্লাহ জানে।
কৃষি শ্রমিক রহমত আলী বলেন, বাহে প্রচুর ঠান্ডা পড়ছে। হাত পা টট্টরিয়া নাগছে (বরফ মত)।মাঠে এক দের ঘন্টা কাজ করলে আর কাজ করা যায় না। কাজের ফাঁকে আগুন তাপা নাগে।কি করমো কাজ না করলে পেটে কি ভাত জুটবে।
কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষনাগার অফিসের কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র বলেন,রবিবার জেলায় সকাল ৬ টায় ১১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।আগামী দুতিনদিন এমন তাপমাত্রা অব্যহত থাকবে।তবে মাসের শেষে একটি শৈত্য প্রবাহের সম্ভবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, জেলায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা রয়েছে।ঘন কুয়াশা ও তীব্র ঠান্ডায় কৃষকদের বোরো আবাদে বিলম্বিত হচ্ছে।বীজতলা এখনো নষ্ট হওয়া শুরু করে নাই।তবে তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে থাকলে চারা খাদ্য গ্রহন করতে না পেরে চারা গাছেরর পাতা হলুদ হয়ে যায়। বীজতলা নষ্টের হাত থেকে বাঁচতে কৃষকদের বাড়তি যত্ন ও ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।