গঙ্গাচড়ায় তিন মাসে কুকুরের আক্রমণে মারা গেছে প্রায় শতাধিক গরু-ছাগল
নির্মল রায়,গঙ্গাচড়া (রংপুর):
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিন মাসে বেওয়ারিশ কুকুরের আক্রমণে মারা গেছে প্রায় শতাধিক ছাগল-গরু এবং আহত হয়েছে দুই শতাধিকেরও বেশি। এতে বিপাকে পরেছেন এই উপজেলার ছাগল পালনকারীরা । ছাগল পালনকারীদের তথ্য অনুযায়ী প্রায় তিন মাসে ১০ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে তাদের। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী চলতি মাসেই প্রায় ৫০ টিরও বেশি ছাগল ও গরু আক্রমণের শিকার হয়েছে। এতে করে তিন মাসে আক্রমণের শিকার হয়েছে প্রায় দুই শতাধিক ছাগল-গরু।
স্থানীয়রা জানান, এসব বেওয়ারিশ কুকুরের যদি সঠিক নিয়ন্ত্রণ করা না হয় তাহলে ছাগল পালনকারীদের মাঝে বিরুপ প্রভাব ফেলবে। তারা আরও বলেন, নিম্নআয়ের পরিবারগুলো এক-দুইটা ছাগল পালন করে এছাড়া বাড়ির মহিলারাও সংসারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে দুই একটি করে ছাগল ও হাঁস-মুরগী পালন করে থাকেন । আমাদের তো আর সেই জমি-জমা নাই। আমরা ফাঁকা জমিতে ছাগগুলো ছেড়ে দিয়ে ঘাস খাওয়াই । এই সুযোগ পেয়ে এসব বেওয়ারিশ কুকুরগুলো ছাগল-গরুগুলোকে আক্রমণ করছে।
গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের মেডিকেল পাড়া এলাকার মেহেরুনেছা বুধবার বিকেলে গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে একটি ছাগল নিয়ে এসেছেন। কয়েকদিন আগে তার ছাগলটি প্রায় ১৫ থেকে ২০ টি কুকুরের আক্রমণের শিকার হন । তাই তিনি হাসপাতালে নিয়ে এসে চিকিৎসা করাচ্ছেন। ছাগলটি এখন সুস্থ্য। এসময় মেহেরুন্নেছা জানান, হামরা গরিব মানুষ এই রকম করি যদি ছাগল- গরুগুলো কুকুরে কামরায় তা হইলে কেমন করি হামরা ছাগল-গরু পোষমো।
কথা হয়, একই এলাকার নুরী বেগম এর সাথে তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগত হামার তিনটা ছাগল খায়া ফেলাইছে ১০ থেকে ১২ টা কুকুর । এই কুকুরগুলা এলাকাত হাঁস-মুরগী-ছাগল কিছুই থোয়চোল না। এই গুলার জ্বালায় কেমন করি একনা জিনিস পোষমো। কিছু দিন আগত পাশের বাড়ির কাদেরের প্রায় ২০ হাজার টাকার ৫ টা ছাগল খায়া ফেলাইছে। সরকার কি এইগুলার ব্যবস্থা না নেয়।
কথা হয় কোলকোন্দ ইউনিয়ন থেকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে চিকিৎসা নিতে আসা আনোয়ারা বেগম এর সাথে । তিনি জানান,‘ সকাল বেলা বাড়ির উঠানে ঘাস খাচ্ছিল ছাগলটি কোথা থেকে যেনো ৪ থেকে ৫ টা কুকুর এসে ছাগলটার গলায় কমড়ে ধরছে। এই ভাবে কি আক্রমণ করলে ছাগল পোষা যায়। কয়েক দিন আগে হামার এলাকাত আরো কয়েক জনের ছাগল মারি ফেলাইছে।
এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডাঃ সাখাওয়াৎ হোসেন এর সাথে তিনি বলেন, ‘ প্রতিদিন যে হারে কুকুর কামড়ানো ছাগল আসতেছে আমরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছি । আমরা বিষয়টি সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি । বিষয়টি নিয়ে উপজেলা মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে কথা বলবো। তবে আশা করছি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সমাধানে দ্রুত পরামর্শ দিবেন ।