বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এক্স—রে মেশিনের কক্ষে তালা
জনবল সংকটে ৮মাস ধরে বন্ধ সেবা
বীরগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি:
জরুরী প্রসুতি সেবায় উদ্ভাবনীমূলক কাজের স্বীকৃতি কারণে টানা দুইবার বিশেষ জাতীয় পুরুস্কার অর্জন, দেশে প্রথম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করিডোরে লাইব্রেরী স্থাপনসহ স্বাস্থ্য সেবায় কাজে বিশেষ অবদান রাখার জন্য স্থানীয় ও জাতীয় পুরুস্কারে ভূষিত হয় দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। কিন্তু বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র এক্স—রে মেশিনের কক্ষটি জনবল সংকটের কারণে দীর্ঘ ৮মাস ধরে তালাবদ্ধ রয়েছে। এক্স—রে মেশিনটি অব্যহৃত থাকায় বিকল হতে বসেছে মেশিনের মুল্যবান যন্ত্রপাতি। দীর্ঘদিন ধরে এক্স—রে মেশিনের কক্ষটি বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সেবা নিতে আসা রুগীরা। এক্স—রে সেবা না পেয়ে রোগীরা ফিরে যাওয়ার কারণে অনেকটাই ম্লান হতে বসেছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিগত দিনের অর্জনগুলি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৬মে এক্স—রে মেশিন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা একমাত্র রেডিওগ্রাফার বিপুল কুমার মন্ডল অবসরে যাওয়ার কারণে পদটি শুন্য হয়ে যায়। বর্তমানে রেডিওগ্রাফারের অভাবে বন্ধ রয়েছে এই সেবা। বিকল্প কোন লোকবল না থাকায় বর্তমানে এক্স—রে কক্ষটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। অপরদিকে যক্ষা রোগ নিয়ন্ত্রণে একটি নতুন ডিজিটাল এক—রে মেশিন বরাদ্দ দেওয়া হলেও কারিগরি ক্রটির কারণে সেটিও ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। মেরামত না করার কারণে নষ্ট অবস্থায় পড়ে আছে মেশিনটি।
এদিকে বর্তমানে এই সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে সাধারণ রোগীরা। সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বল্পমুল্যে এক্স—রে সেবা পাওয়া যায়। এখানে এক্স—রে করতে ছোট ফ্লিমের জন্য ৭৫টাকা এবং বড় ফ্লিমের জন্য ১২০টাকা পরিশোধ করতে হয় রোগীদের। কিন্তু সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে হতে এক্স—রে করতে হচ্ছে। এতে তাদের ব্যয় হচ্ছে ৬শত টাকা হতে থেকে ৮০০ টাকা।
সেবা নিতে আসা পলাশবাড়ী ইউনিয়নের মোঃ রশিদুল ইসলাম জানান, স্বপ্ল আয়ে রোগের চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে বেশ সংকটে আছি। কারণ দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এরপর নিজের চিকিৎসা ব্যয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স—রে সেবা চালু থাকলে অনেক টাকা বেচে যেত। আর্থিক সংকটে থাকা আমাদের মতো রোগীদের জন্য এই অতিরিক্ত ব্যয় কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুজালপুর ইউনিয়নের জগদল গ্রামের নাজমুল ইসলাম বলেন, এখানে এক্স—রে করতে যে টাকা লাগে বাইরে তার দ্বিগুনের বেশি টাকা লাগে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই সেবা চালু থাকলে বেশ কিছু টাকা সাশ্রয় হতো। যেটি দিয়ে অন্তত্যপক্ষে কিছু ওষুধ কেনা যেত। এই সেবা বন্ধ থাকায় বিপদে পড়েছে আমাদের মতো স্বল্প আয়ের রোগীরা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. মোহাম্মদ মহসীন বলেন, রেডিওগ্রাফারের পদটি শুন্য থাকায় সাময়িক ভাবে এক্স—রে সেবা প্রদান বন্ধ রয়েছে। তবে আমরা পদটি শুন্যতার কথা উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের নিকট লিখিত ভাবে চাহিদা পত্র প্রেরণ করেছি। তবে কবে এ পদে জনবল নিয়োগ হবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন তথ্য জানা নেই।