পীরগঞ্জের মৃৎশিল্পের কারিগদের হাতের তৈরি মটকার চাহিদা বেড়েছে
পীরগঞ্জ(রংপুর)প্রতিনিধিঃ
রংপুরের পীরগঞ্জে গুড় মজুদের জন্য মাটির মটকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা কারিগররা। কারিগরদের অক্লান্ত পরিশ্রমে কাদা মাটি থেকে নিপুণ হাতে তৈরি করা হচ্ছে এই মটকা। বিগত বছরের চেয়ে এবছর মটকার চাহিদা বেরে গেছে।
উপজেলার ৪ টি স্থানে তৈরি করা হচ্ছে গুড় মজুতের এই মাটির তৈরি মটকা।
চন্ডিপুর পাল পাড়া গ্রামের সুশীল চন্দ্র পাল প্রতিবছরের মতো এবারও রায়পুর ইউনিয়নের ফলিরবিল বাজারে মটকা তৈরির কারখানা চালু করেছেন। একই এলাকার রাজেন পাল,অজয় পাল, কৃষ্ণ চন্দ্র পাল, মনোরঞ্জন পাল মিলে এবার খালাশপীর কামার পাড়ায় কাজ শুরু করেছে। এ শিল্পের কারিগররা জীবনের শেষ পর্যন্ত এ কাজ আঁকড়ে ধরেই বেঁচে থাকতে চাই। কারণ এটি বাপ-দাদার পেশা।এই কাজের সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের পরিচিতি। দিনদিন কমে আসছে মাটির তৈরি জিনিসপত্র দাম। তারপরও প্রতিবছর আখের গুড় সংরক্ষণের বা মজুদ কাজে মটকা তৈরিতে নিয়োজিত পাল পাড়ার লোকজন । এলাকার আখ চাষিদের গুড় রাখার পাত্রের চাহিদা পূরণের জন্য অধিকাংশ শ্রমিক কাজ করে কারখানা গুলোতে।
এ শিল্পের প্রায় শ্রমিকরা বলছেন, পৌষ মাস থেকে শুরু করে চৈত্র মাস পর্যন্ত মটকা তৈরির কাজ চলে। তবে এই শিল্পে লাখ লাখ টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। মাটির দাম ও কারিগরের মজুরি অনেক বেড়েছে। তারপরও এই কাজের উপর তাদের ভরসা।
চন্ডিপুর পাল পাড়া গ্রামের সুশীল চন্দ্র পাল জানান, ফলিরবিল বাজার, মদনখালী ইউনিয়নের মাগুরা, কামার পাড়া এবং চন্ডিপুর গ্রামে মটকা তৈরির কারখানায় শতাধিক কারিগর কাজ করছেন । মৃৎশিল্পের এই কারিগরেরা দাবি করেন, তাঁদের রুগ্ণ শিল্পকে বাঁচাতে সরকারী সহযোগিতা পেলে পরিবেশবান্ধব মৃৎশিল্পীকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারবেন।
স্থানীয়রা বলছেন, এলাকায় অধিকাংশ কৃষক আখের চাষ করে থাকেন। চাষিরা নিজেদের গুড়ের চাহিদা অনুযায়ী আখের চাষ করে থাকেন। কেউ কেউ আবার নিজেদের চাহিদা পুরন করে বাজারে বিক্রি করে গুড়। এখানে গুড় রাখার পাত্র হিসেবে মটকার চাহিদা প্রচুর।
আখ চাষি রফিকুল ইসলাম, তাজুল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম বলেন, আখের গুড় এ এলাকায় অনেক জনপ্রিয়। এখান কার মাড়াই গুড় বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। যে কারনে গুড় মজুদ রাখার জন্য অন-টাইম মাটির তৈরি মটকার চাহিদা বেশি। নিজেদের বাড়িতে হান্ডি,বা বড় পাতিলে গুড় মজুদ রাখা হয়। বাহিরে মটকাসহ গুড় বিক্রি করা হয়।