চিলমারীতে পল্লী বিদ্যুতের ভৌতিক বিল গ্রাহক ভোগান্তি চরমে
চিলমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে বিদ্যুৎ বিল বৃদ্ধির দোহাই দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভৌতিক বিল আদায় করার অভিযোগ উঠেছে।ভৌতিক বিল কাধে চাপিয়ে দেয়ায় প্রায় ৫৩হাজার গ্রাহক চরমভাবে ভোগান্তিতে পড়েছেন। অপরদিকে সময়মতো বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ কাটাসহ নানা ভোগান্তিতে গ্রাহক।
জানা গেছে,কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির চিলমারী জোনাল অফিসের আওতায় প্রায ৫৩হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আসছে। প্রায়ই বিচ্ছিন্নভাবে অনেক গ্রাহকের বিলে নানা রকম অসঙ্গতি দেখা দেখা যায় বলে গ্রাহকদের অভিযোগ। বিগত সময়ে বিদ্যুৎ বিলে বিভিন্ন অসঙ্গতি দেখা দিলেও মার্চ মাসের বিদ্যুৎ বিল বৃদ্ধির দোহাই দিয়ে বিলে শতভাগ ভৌতিক বিল দেয়ায় গ্রাহকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ।গ্রাহকদের অভিযোগ,মার্চ মাসের বিলে ১ম থেকে ৬ষ্ঠ স্লাব পর্যন্ত বিল,ডিমান্ড চার্জ,মিটার ভাড়া ও ভ্যাটসহ সকল অংকের যোগ ফলে কোন মিল নেই অর্থাৎ মোট যোগ ফলে টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। গ্রাহকদের অভিযোগ,পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বিলের সময় ভৌতিক বিল তৈরী করে অথচ যান্ত্রিক ত্রুটিসহ নানা অব্যবস্থাপনা দূর করতে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।মিটারে বর্তমান রিডিং এর সাথে মিল না থাকা,বিলের সঙ্গে ২—৩মাসের পরিশোধিত বকেয়া বিল সংযুক্ত করাসহ বিভিন্নভাবে গ্রাহকদের হয়রানী করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিলের যোগফল না মিলিয়ে বিল বেশী নেয়ায় গ্রামের সহজ—সরল কৃষক,দিনমজুররা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার সবুজপাড়া এলাকার মো.রেজাউল মন্ডল এর ৯৯২৯৮৬২৭ নং মিটারের বিলে দেখা গেছে,তার ১ম স্লাবে ৫.২৬টাকা হারে ৭৫ ওয়াটে ৩৯৪.৫০টাকা,২য় স্লাব—৭.২০ টাকা দরে ১২৫ওয়াটে ৯০০টাকা,৩য় স্লাব—৭.৫৯ টাকা দরে ১৫ওয়াটে ১১৩.৮৫টাকা,ডিমান্ড চার্জ ৮৪টাকা, মিটার ভাড়া ১০টাকা ও ভ্যাট ৮৪টাকা মিলে মোট ১হাজার ৫৮৬টাকা হওয়ার কথা।সেখানে যোগফল করা হয়েছে ১হাজার ৭৭১টাকা।ওই গ্রাহকের বিলে অলিখিতভাবে ১৮৫টাকা বেশী নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।একই ভাবে ১৭০৩৪২২০১৬ নং মিটারে ১হাজার ৭০৪টাকার স্থলে ১হাজার ৮৫২টাকা লিখে ১৪৮টাকা বেশী, ০০১৭৪৯৫৮ নং মিটারে ৫৫টাকার স্থলে ৬৬টাকা লিখে ১১টাকা বেশী, ৫৫৮৮৭৪৪ নং মিটারে ২৯৯টাকার স্থলে ৩১৭টাকা লিখে ১৮টাকা বেশী নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। শত শত গ্রাহকের মুখে একই অভিযোগের কথা শোনা যায়।
বাবু মিয়া,রফিকুল ইসলাম,আ.মজিদ,সাখাওয়াত হোসেনসহ কয়েকজন বিদ্যুৎ গ্রাহক বলেন,বিদ্যুৎ বিলের নামে গ্রাহকদের ধোঁকা দিচ্ছে পল্লিবিদ্যুৎ সমিতি।হঠাৎ অলিখিতভাবে বিদ্যুৎ বিল বেশি নিচ্ছে।এমন ভৌতিক বিল এর আগে কখনো হয়নি। আমাদের মতো সহজ,সরল ও নিম্ন আয়ের লোকেরা কাজ রেখে বিল ঠিক করতে অফিসে যাতায়াত করা সম্ভব নয়। বিদ্যুৎ গ্রাহকরা বলেন,সার্ভিস চার্জ ও ভ্যাট ছাড়াও বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রতি মাসে দশ টাকা হারে মিটার ভাড়া ও নেওয়া হচ্ছে।পল্লীবিদ্যুত সমিতির নিকট টাকা দিয়ে মিটার কিনে নেওয়ার পরও মাসিক হারে আজীবন মিটার ভাড়া দিতে হবে কেন।এসব বিষয়ে সঠিকভাবে তদারকি করারও কেউ নেই।
চিলমারী জোনাল অফিসের বিলিং সুপারভাইজার সালমা খাতুন বলেন,ফেব্রুয়ারী মাসে সরকারীভাবে বিদ্যুতের বিল বৃদ্ধি করা হয়েছে।পুরাতন বিলে বর্ধিত টাকা বসানোর জায়গা না থাকায় অলিখিতভাবে বিল বেশী নেয়া হয়েছে। এটি শুধু এ মাসেই হবে,অন্য মাসে আর হবে না।
কুড়িগ্রাম—লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চিলমারী জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী মো.মোস্তফা কামাল বলেন, বিলের কাগজ যেভাবে আছে ওই ভাবে যোগ করলে মিলবে না কিন্তু সফটওয়্যারে টাকা ঠিক আছে।হিসাব না মিললে অফিসে আসেন দেখায়ে দিব।