বিরলের বেতুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাতের অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি

আতিউর রহমান, বিরল (দিনাজপুর):
দিনাজপুরের বিরলের বেতুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের এলোপাথারীভাবে বেত্রাঘাতের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের ১৫ দিনেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। আহত শিক্ষার্থী রুফাইদা আক্তার এর পিতা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ৯ জুন ২০২৪ তারিখে ওই অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, বিরল উপজেলার ভান্ডারা ইউনিয়নের বেতুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে রোববার (৯ জুন) বিকেলে ৬ষ্ঠ শ্রেনির শিক্ষার্থীরা শ্রেনি কক্ষে সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করছিল। শ্রেনিকক্ষে শিক্ষার্থীদের চেচামেচির শব্দ শুনতে পেয়ে প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ৬ষ্ঠ শ্রেনির সকল শিক্ষার্থীদের তাঁর অফিস কক্ষের সম্মুখে ডেকে নিয়ে চেচামেচির অপরাধে একাধারে সকল শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাত শুরু করে। প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম এর আকস্মিক বেত্রাঘাতে রুফাইদা আক্তারসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। বিদ্যালয় ছুটি শেষে শিক্ষার্থীরা স্ব—স্ব বাড়িতে গিয়ে আহতদের মধ্যে অনেকেই গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পরলে বাড়ির লোকজনদের বিষয়টি অবগত করেন। পরবতীর্তে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম এর নিকট আহত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ঘটনার বিষয় জানতে গেলে তিনি কোন সদুত্তর না দিয়ে উল্টো হুমকি প্রদর্শন করেন বলে অভিভাবকরা জানান। আহতদের মধ্যে ৬ষ্ঠ শ্রেনির খ—শাখার রুফাইদা আক্তার (১২) যার রোল নং— ১১, শ্রীমতি বর্ষা রাণী রায় (১২) যার রোল নং— ৩৬ এবং শ্রীমতি তিস্তা রাণী রায় (১২) যার রোল নং— ১২ বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহন করে। সেজুতি রাণী রায়, খাদিজাতুল কোবরাসহ অন্যান্য আহতরা স্থানীয় চিকিৎসকের নিকট প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করেছে বলে জানিয়েছে। অভিযোগকারী রফিকুল ইসলাম ঘটনার সুষ্ঠ্য তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ঘটনার বিষয় জানতে প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মওলা শাহ্ এর মুঠোফোনে অভিযোগের বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বহ্নি শিখা আশাসহ পরদিন ১০ বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বিষয়টি শুনেছেন। দুষ্টমি করার জন্য ৬ষ্ঠ শ্রেনীর সকল শিক্ষার্থীদের বেতের আঘাত করেছে ঠিকই কিন্তু কোন আক্রশমুলক নয় বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন অভিযোগের বিষয়টি আরও তদন্ত করে দেখা হবে।
এদিকে, প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তিনি সহকারী শিক্ষক থাকাকালীন অবস্থায় এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানীর ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে কৌশলে কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে চাকুরী বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাওয়ার স্মৃতিচারণ করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক এক সদস্য জানান এবারো সে ম্যানেজ করেই বহাল তবিয়তে থাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কাজীর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নাই, প্রবাদ বাক্যটি প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম এর জন্য বার বার প্রযোজ্য। কেননা গত ২০১১ খ্রিস্টাব্দে এই বিদ্যালয়ে অপর একজন সহকারী শিক্ষক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক ঘটনায় অবরুদ্ধ থাকার পরও কোন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তাই এ বিদ্যালয়ে আইনের প্রয়োগ যেন কাজীর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নাই, প্রবাদ বাক্যটির মতই।