মিঠাপুকুরে সেফটিক ট্যাংকে পড়ে একই পরিবারের ২ জনসহ প্রাণ গেল ৩ জনের

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি:
মিঠাপুকুরে সেফটিক ট্যাংকে পড়ে প্রাণ গেল ৩ জনের। এরমধ্যে ২ জন একই পরিবারের সদস্য। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের ধাপ উদয়পুর গ্রামে কায়েমের বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ঘন্টাখানেক পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে নিহতদের উদ্ধার করে। তারা হলেন— ওই গ্রামের বাদশা মিয়ার স্ত্রী দেলোয়ার বেগম (৫৫), তার ছেলে ইদা মিয়া (৩৫) ও প্রতিবেশি তবারক হোসেনের ছেলে ইবলুল মিয়া (৩৫)। দেলোয়ারা বেগম ও ইদা মিয়া সম্পর্কে মা—ছেলে। দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে রংপুর—৫ (মিঠাপুকুর) আসনের সংসদ সদস্য জাকির হোসেন সরকার, ইউএনও বিকাশ চন্দ্র, সহকারী পুলিশ সুপার (ডি সার্কেল) আবু হাসান মিয়া ও মিঠাপুকুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ।
সরেজমিনে গিয়ে ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, ধাপ উপদয়পুর কায়েমের বাজার এলাকার দেলোয়ারা বেগম সকালে রান্নার জন্য বাড়ির পিছনে লাউ গাছের পাতা তুলতে যান। এ সময় তিনি অসাবধানতা বশত. টয়লেটের সেফটি ট্যাংকে পড়ে যায়। তার চিৎকারে বাড়ির লোকজন ছুটে এসে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন এবং সেফটিক ট্যাংকে নেমে পড়েন ছেলে ইদা মিয়া। তিনিও সেখানে অজ্ঞান হয়ে যান। তাদেরকে বাঁচাতে মই দিয়ে নিচে নেমে পড়েন প্রতিবেশি তবারক মিয়া। তারও কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে এলাকাবাসী শঠিবাড়ী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যদের খবর দেন। প্রায় ঘন্টাখানেক পড়ে তারা গিয়ে ৩ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
প্রতিবেশি মনজুর হোসেন বলেন, দোলোয়ার বেগম সকালের রান্নার জন্য লাউ গাছের পাতা তুলতে গিয়ে সেফটি ট্যাংকে পড়ে যায়। তাকে বাঁচাতে ছেলে ইদা মিয়া সেখানে নেমে পড়েন। তাদের দু’জনের সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশি ইবলুল মিয়া নেমে পড়েন। তিনিও সেখানে আটকে যান। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে তাদেরকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। আরেক প্রতিবেশি আশিকুর রহমান বলেন, ওই সেফটি ট্যাংকটি ছিল কার্বন মনোক্সাইডে পরিপূর্ণ। এই গ্যাসে তাদের মৃত্যু হতে পারে।
গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন—অর রশিদ বলেন, মুলত. দূর্ঘটনা বশত. মা দেলোয়ারা বেগম সেফটি ট্যাংকে পড়ে যায়। তাকে বাঁচাতে ছেলে ও একজন প্রতিবেশি সেখানে নেমে পড়েন। পরে ৩ জনেই মৃত্যুবরণ করেন। মিঠাপুকুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, সেফটি ট্যাংকে পড়ে তাদের ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ইউএনও বিকাশ চন্দ্র বলেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে কথা বলেছি। শান্তনা দেওয়া চেস্টা করেছি। গভীর শোক প্রকাশ করছি।