১১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ - ২৫ মে, ২০২৫ - 25 May, 2025

ফুলবাড়ীতে গোরকমন্ডল আবাসনের পরিবার গুলোর মানবেতর জীবন-যাপন

আমাদের প্রতিদিন
10 months ago
227


আব্দুল আজিজ মজনু, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম):  

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ৫৫টি পরিবার মানবেতর জীবন—যাপন করে আসছে। জীবন সংগ্রামে ঠিকতে না পেয়ে অন্যত্র চলে গেছে ১৭৫টি অসহায় পরিবার। অতি কষ্টে পরিবার পরিজন নিয়ে ২২ বছর আবাসনে থাকলেও বসবাসরত ৫৫ টি পরিবার ফুটো—ফাটা মরিচা ধরা টিনের চালে পলিথিন দিয়ে কোন রকমে দিন কাটাচ্ছেন তারা। ঘরের বেড়া ও উপরের টিনগুলো পচে গেছে। ২০১৭ সালের ভয়াভহ বন্যায় কয়েকটি ব্যারাক দুমড়ে মুচড়ে পড়ে যাওয়ায় পরেও খোজ রাখেনি কেউ।

সরেজমিন দেখাগেছে, উপজেলার সীমান্তরঘেষা গোরকমন্ডল এলাকার ভুমিহীন ও গৃহহীন ছিন্নমুল পরিবারের জন্য ২০০৩ সালে নির্মিত হয় আশ্রয়ণ ও গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প (আবাসন)। খাস জমির ওপর ঘর নির্মান করে সুফলভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হলে বসবাসের সুযোগ পান ২৩০ টি ভুমিহীন পরিবার। মাত্র ৪/৫ বছর এ পরিবারগুলো পরিবার—পরিজন নিয়ে বসবাস করেছেন। এরপর আস্তে আস্তে আবাসন প্রকল্পের টিনসেটের ঘরগুলোর চাল ফুটো হয়ে যাওয়ায় একেবারে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। আবাসনের প্রতিটি ঘরের চাল ও টিনের বেড়া বড় বড় ফুটো হয়ে গেছে। এখন বর্ষা শুরু হয়েছে। বৃষ্টির পানি তাদের নিত্যদিনের সঙ্গি। ২২ বছর পূর্বে নির্মিত ঘরগুলো সংস্কার না করায় টিনের ছাউনি বেড়া ফুটো হয়ে গেছে। ফলে সামন্য বৃষ্টি হলেই ঘরের ভিতর পানি পড়ে। কেউ কেউ বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পেতে টিনের ওপর পলিথিন দিয়ে রেখেছেন। প্রতিটি পরিবারের জন্য একটি টিউবওয়েল ও একটি টয়লেট নির্মান করা হলেও সংস্কারের অভাবে তা ব্যবহারের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে কেউ কেউ পলিথিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে কাঁচা টয়লেট বানিয়ে তা ব্যবহার করছেন। শত কষ্টের পরেও ভুমিহীন পরিবার গুলো দিনের পর দিন নিরুপায় হয়ে দিন কাটাঁচ্ছেন।

আবাসনে বাসিন্দা জান্নাতী বেগম (৫৫) যুগান্তরকে জানান, আমাদের কথা কেউ শোনেন না। আমরা অনেক কষ্টে আছি। দিনাতিপাত করছি। কেই খোজ খবর রাখে না। বৃষ্টি হলেই ছেলে নিয়ে পলিথিন টিনের উপর দিয়ে কোন রকমে দিন কাটাচ্ছি। কারণ আমাদের তো অন্য কোথাও থাকার জায়গা নেই। তাই ঘরের ভেতর ছাতা দিয়ে রান্না ভান্না করছি।   

গোরকমন্ডল আবাসনের সভাপতি মোন্নাফ হোসেন জানান, ১০ থেকে ১২ বছর ধরে আবাসনটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা প্রশাসনের যোগযোগ করেছি। প্রতিশ্রম্নতি দিলেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি। বর্তমানে আবাসনের থাকা ঘরগুলো অবস্থা খুবই করুন। চাল ফুটো হয়েছে। টয়লেটের ঘরগুলোর টিনও পঁচে গেছে। বাধ্য হয়ে বৃষ্টি ও শীত থেকে রক্ষা পেতে কোন রকমেই টিনের চালে পলিথিন ও বেড়া দিয়ে ঘিরে কাঁচা টয়লেট বানিয়ে তা ব্যবহার করছি। অসহনীয় কষ্টের কারণে ১৭৫ টি পরিবার অন্য জায়গায় ঠাই নিয়েছে। আমাদের জায়গা জমি নেই তাই এখানে আছি।

ইউএনও রেহেনুমা তারান্নুম ও উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সবুজ কুমার গুপ্ত যুগান্তরকে জানান,গোরকমন্ডল আবাসনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। চলতি অর্থ বছরেই বরাদ্দ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বরাদ্দ সাপেক্ষে বসবাসরত প্রত্যেকটি পরিবারকে পাঁকাঘর নির্মান করে দেওয়া হবে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth