চিলমারীতে কাজ অসম্পন্ন রেখে ঠিকাদার চলে যাওয়ার অভিযোগ,ভোগান্তিতে মুসল্লিরা

উপজেলা মডেল মসজিদ
চিলমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কাজ সম্পন্ন না করেই ঠিকাদারের লোকজন প্রকল্পের স্থান ছেড়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।মসজিদের অভ্যন্তরে এসি না লাগিয়ে ও অনেক কাজ বাকী রেখেই চলে যান তারা। ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকাবাসী ও মুসল্লিরা। উপজেলা মডেল মসজিদের নির্মাণকাজে অনিয়ম ও কাজ শেষ না করে ঠিকাদারের লোকজন চলে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
জানা গেছে,সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদের মধ্যে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কাজের জন্য রংপুরস্থ তারাগঞ্জ উপজেলাধীন ইকরচালী এলাকার মেসার্স সৈকত এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি হয় ২০১৯ সালের ২মে তারিখে।যার চুক্তি মূল্য ছিল ১১কোটি ৩৫লক্ষ ৭৪হাজার ৩৯০টাকা। চুক্তির তারিখ থেকে ১৮মাস মেয়াদ অর্থাৎ ২০২০সালের অক্টোবর মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও অদ্যাবধি মসজিদটির কাজ শেষ হয়নি।
এদিকে সারাদেশে চলমান মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র একযোগে ১৭এপ্রিল ২০২৩তারিখে ভাচুর্য়ালি উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের ১১মাস পর চলতি বছরের ১৫মার্চ তারিখে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের উদ্যোগে কাজ অসম্পন্ন রেখেই মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য খুলে দেওয়া হয় মসজিদটি। নামাজ চলা অবস্থায় মসজিদের এসি লাগানোসহ অসম্পন্ন কাজ গুলি করার কথা থাকলেও তা না করেই প্রকল্পের স্থান ত্যাগ করে ঠিকাদারের লোকজন। মডেল মসজিদের নির্মাণকাজে অনিয়ম ও কাজ শেষ না করে ঠিকাদারের লোকজন চলে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
সরেজমিনে দেখা যায়,উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত ৪৮শতাংশ জমির ওপর নির্মাণাধীন মডেল মসজিদটিতে জুম্মার নামাজসহ ৫ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা হলেও অসম্পন্ন রয়েছে অনেক কাজ।এতোদিন পরেও লাগানো হয়নি এসি। মসজিদের সিড়ির সামনে এসএস বারের গেটটি লাগানোর ২দিন পরে ভেঙে যাওয়ায় তা গুটিয়ে রাখা হয়েছে। গেটটি না থাকায় প্রায়ই দেখা যায় কুকুর মসজিদের ভিতরে প্রবেশ করে শুয়ে থাকে। কয়েকটি স্থানে নিম্নমানের সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে যা থেকে স্পষ্ট করে মানুষ চেনা যায় না। মসজিদের গুরুত্বপূর্ন অনেক স্থানে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়নি।সামনের সিড়িতে উঠেই ফাটা এবং নিম্নমানের টাইল্স দেখতে পাওয়া যায়। মসজিদের মিম্বারের দুই পাশ্বে নিম্নমানের টাইল্স লাগানো হয়েছে এরই মধ্যে ক্ষত বেরিয়ে পড়তে শুরু করেছে,যা দেখতে পরিত্যাক্ত বলে মনে হয়।উপরের তলায় মহিলাদের নামাজের স্থানে সাউন্ড যাওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়নি। নিচে মুল ফটোকটি দেয়াল থেকে আলাদা হয়ে গেছে। মিনার এবং জানালার ফাক দিয়ে সামান্য বৃষ্টিতেই ভিতরে পানি জমে থাকে। ফিটিংসের পাইপ ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়নি। বিভিন্ন স্থানে পাইপের জোড়া দিয়ে পানি পড়তে দেখা যায়। মসজিদের দেয়ালে বিভিন্ন স্থানে পলেষ্টার ধসে যাওয়া শুরু করেছে। মসজিদের ভিতরে কাম্য সংখ্যক ফ্যান না থাকায় মুসল্লিরা নামাজ আদায়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অনেকের অভিযোগ।
মসজিদের অনেক মুসল্লি জানান,দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও উপজেলার একমাত্র মডেল মসজিদে এসি এবং কাম্যসংখ্যক ফ্যান না থাকায় নামাজ আদায়ে মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। মসজিদের ভিতরে পানি এবং বিভিন্ন জায়গায় নিম্নমানের কাজ নিয়েও অনেক সমালোচনা করেন তারা।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী মো.মোকসুদার রহমান মকসুদ জানান, মসজিদটির এসি সাপ্লাইয়ারের সমস্যার কারনে এসি লাগাতে বিলম্ব হচ্ছে। এসিসহ আমরা লোকবল নিয়ে গিয়ে সব সমস্যার সমাধান করে আসবো।
ঠিকাদার আনিছুর রহমান লিটন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মিনহাজুল ইসলাম জানান,এসি লাগানোসহ বিভিন্ন ত্রুটিগুলি সমাধানের কথা ছিল,কেন করা হয়নি জানিনা। ঠিকাদার ও ইসলামি ফাউন্ডেশনের সাথে কথা বলা হবে।