৫ মাঘ, ১৪৩১ - ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ - 18 January, 2025

দিনাজপুরে মটর সাইকেল শোরুমের কর্মচারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ

আমাদের প্রতিদিন
6 months ago
81


আতিউর রহমান, বিরল (দিনাজপুর):

এম, আর মটরস শোরুমের কর্মচারী নুরনবীকে  চোর সাবস্ত  করে মধ্যযুগীয় কায়দায় শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জ্বলন্ত সিগারেটের আগুনের স্যাকা দেওয়াসহ শারিরীকি নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শারিরীক নির্যাতনের শিকার ওই কর্মচারী  বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনাটি গত সোমবার বোচাগঞ্জ উপজেলার ছাতইল ইউনিয়নের জংলিপীর বাজারে পুরাতন মটর সাইকেল বিক্রেতা এম, আর মটরস এর মালিক আব্দুর রঊফ ঘটিয়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শারিরীক নির্যাতনের শিকার কর্মচারী নুরনবী জানান, বিরল উপজেলার ৪ নং শহরগ্রাম ইউনিয়নের রতনৌর গ্রামের হাবিবুর রহমান এর ছেলে নুরনবী (২২) পাশের বোচাগঞ্জ উপজেলার জংলিপীর বাজারে পুরাতন মটর সাইকেল ক্রয়—বিক্রয়ের প্রতিষ্ঠান এম, আর মটরস শোরুমে কর্মচারী হিসেবে গত ৪ মাস থেকে কাজ করে আসছে। এম, আর মটরস এর শোরুমে ম্যানেজার হিসেবে শোরুমের মালিক আব্দুর রউফ এর ভাতিজা রিফাত ইসলাম চাকুরী করেন। ম্যানেজার রিফাত অনলাইনে ক্যাসিনো খেলে লোকসান হওয়ায় শোরুমের একটি ডিসকোভার—১২৫ সিসি মটর সাইকেল গত রোববার কর্মচারী নুরনবীকে বাইরে বিক্রি করার জন্য বের করে দেন। নুরনবী মটর সাইকেলটি বিরলের ধুকুরঝাড়ী বাজারের সাইদুর রহমান এর নিকট ৭৯ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করে রিফাতকে টাকা দেয়। রিফাত বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য কর্মচারী নুরনবীকে ১০ হাজার টাকা দিতে চায়। পরেরদিন সোমবার এম আর মটরস এর শোরুমের মালিক আব্দুর রউফ শোরুমে এসে ডিসকোভার—১২৫ সিসি মটর সাইকেলটি দেখতে না পেয়ে শোরুমের কর্মচারী নুরনবীর উপর চাপ সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে শোরুমেই নুরনবীর উপর চোড়াও হয়ে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। ম্যানেজার ভাতিজা রিফাত মটর সাইকেল বিক্রির সাথে জড়িত থাকার কথা বলার পরও আপন ভাতিজা রিফাত জড়িত থাকার বিষয়টি আমলে না নিয়ে কর্মচারী নুরনবীকে চোর স্বাবস্ত করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জ্বলন্ত সিগারেটের আগুনের স্যাকা দেওয়াসহ লোহার রডের পাইপ দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। পরে বোচাগঞ্জ থানার পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নির্যাতনের শিকার কর্মচারী নুরনবীকে উদ্ধার করে। এরপর সোমবার ধুকুরঝাড়ীর সাইদুর এর নিকট থেকে মটর সাইকেলটি ফেরত নিয়ে শোরুমে দিয়ে আপোষ—মিমাংসার কথা বলে তাকে পুলিশ হেফাজত থেকে নিয়ে আসে। নির্যাতনের শিকার নুরুনবীর শারিরীক অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় বুধবার সকালে বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার কর্মচারী নুরনবী ও তাঁর পরিবারের দাবি শোরুমের মালিক আব্দুর রউফ এর ভাতিজা ম্যানেজার রিফাত ইসলাম মটর সাইকেল বিক্রির পরিকল্পনাকারী হলেও তাঁর বিষয়টি শোরুমের মালিকের আপন ভাতিজা হওয়ায় এড়িয়ে তাঁরা যান। মধ্যযুগীয় কায়দায় তাকে নির্যাতনের সুষ্ঠ বিচার চায় নির্যাতনের শিকার নুরনবী এর পরিবার।

এ বিষয়ে এম আর মটরস শোরুমে মালিকের ০১৩৩৪০৩৯৮৮৮ নম্বরে ফোন দিলে মালিকের ভাই বাবুল হোসেন পরিচয় দিয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, শোরুমের কর্মচারী নুরনবী শোরুমে প্রায় ৪ মাস থেকে কাজ করে। সে গোপনে একটি মটর সাইকেল বিক্রি করেছিল। তাঁকে আগুনের স্যাকা দেওয়া হয়নি জানিয়ে বাজারের বিষয় কেবা কারা তাকে মারপিট করেছে বলে জানান। শোরুমের ম্যানেজার রিফাত মটর সাইকেল বিক্রি সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে কর্মচারী নুরনবীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল মটর সাইকেল বিক্রির সাথে কারা জড়িত সে জানায়নি।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth