অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন স্নাতক শিক্ষার্থী আশিক
কুড়িগ্রামে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী যুব লীগ ও ছাত্র লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান আশিক (২৪) ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। রবিবার (০১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহতের ছোট ভাই আতিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পরিবার সূত্রে জানাযায়, নিহত আশিক উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের সাতভিটা গ্রামের কৃষক চাঁদ মিয়ার ছেলে। উলিপুরের পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থী সাত মাস আগে বিয়ে করেন।
গত ৪ আগস্ট কুড়িগ্রাম শহরের শাপলা চত্বরে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের সঙ্গে শিক্ষার্থী-জনতার সংঘর্ষের সময় মাথায় ঢিল লেগে আহত হন আশিক। প্রথমে তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ক্রমে অবস্হার অবনতি ঘটলে ১৮ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার ( ১ সেপ্টেম্বর) মারা যান।
আশিকের ছোট ভাই আতিক বলেন, ‘আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে বিবেকের তাগিদে ৪ আগস্ট আমি ও ভাইয়া আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম। আওয়ামী লীগের লোকজনের ঢিল ও পিটুনিতে আমিও আহত হই। কিন্তু ভাইয়া মাথায় আঘাত পেয়ে গুরুত্বর আহত হয়। স্হানীয় হাসপাতালে নিলেও আঘাতের কারণে তার বমি শুরু হয়। জ্বর আসে। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেলো না। চিকিৎসকরা বলেছেন, আঘাতের কারণে তার মাথায় রক্তক্ষরণ হয়েছে অনেক বেশি।’
আতিক আরও জানান, আশিকের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার জানাজা শেষে লাশ গ্রামের বাড়িতে আনা হবে। সোমবার সেখানেই দাফন সম্পন্ন হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এর আগে কুড়িগ্রামের চার জন নিহত হন। তারা সবাই ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে তাদের লাশ কুড়িগ্রামে নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে এনে দাফন করা হয়। কুড়িগ্রামে আন্দোলন সংগ্রামে আহত হওয়ার পর আশিকের মৃত্যু প্রথম।