রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত সাজ্জাদের মরদেহ ৪৪ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত সবজি ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেনের মরদেহ ৪৪ দিন পর নগরীর মিস্ত্রিপাড়া কবরস্থান থেকে ম্যাজিষ্ট্রেট সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতিতে উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। মরদেহ উত্তোলন করার সময় নিহত সাজ্জাদের মা ময়না বেগম বোন বাবলী বেগম সহ স্বজন এলাকার শত শত মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ নিহত হবার পর ময়না তদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফন করা হয় বলে অভিযোগ করে ময়না তদন্ত করার জন্য সাজ্জাদ হোসেনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্ত করার জন্য রংপুরের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটান ম্যাজিষ্ট্রেট রাজু আহাম্মেদের আদালতে আবেদন করলে বিজ্ঞ বিচারক মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্ত করার নিদ্দের্শ দেন। আদালতের নির্দেশ পেয়ে সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট এটিএম আরিফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতিতে সাজ্জাদের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। পরে ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
সূত্রে জানাগেছে, সাজ্জাত নিহত হবার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে গত ১২ আগস্ট বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল সহ কেন্দ্রীয় ও রংপুরের বিএনপি নেতাকর্মীরা তার বাড়িতে যান। পরে নেতৃবৃন্দ সাজ্জাদের কবর জিয়ারত করে পরিবারের সাথে সাক্ষাত করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। একইদিনে রংপুরে মানিক মিয়া, মেরাজুল ইসলাম ও মোসলেম উদ্দিন মিলনসহ নিহতের বাড়িতে বিএনপি নেতৃবৃন্দ যান ও আর্থিক সহায়তা দেন। এর আগে গত ১৯ জুলাই সারাদেশের ন্যায় রংপুর নগরীতে কোটা বিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্র—জনতার বিক্ষোভ চলা কালে নিহত সাজ্জাদ হোসেন বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে উক্ত বিক্ষোভে যোগ দেন। এসময় সিটি বাজার এলাকায় পুলিশের বেপরোয়া গুলিতে ২৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী ও সবব্জি ব্যবসায়ী সাজ্জাদ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। খবর পেয়ে বিএনপি নেতাকর্মীসহ তার স্বজন ও এলাকাবাসী এবং আন্দোলনকারী ছাত্র জনতা লাশ উদ্ধার করে তার রংপুর নগরীর পুর্ব শালবন শিক্ষাঙ্গন এলাকার বাড়িতে নিয়ে যায়। ঘটনার পর পুলিশ ময়না তদন্তের কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় স্বজন ও এলাকাবাসী নিহত সাজ্জাদের লাশ জানাযা শেষে মিস্ত্রিপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়।
পরে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতনের পর গত ২০ শে আগস্ট নিহত সাজ্জাদের স্ত্রী জিতু বেগম বাদী হয়ে রংপুরের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটান ম্যাজিষ্ট্রেট রাজু আহাম্মেদের আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, ছোট বোন শেখ রেহেনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান, ওয়াকার্স পার্টি সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু সহ ৫৭জনের নাম উল্লেখ করে তাদের আসামি করে মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য মেট্রোপলিটান কোতোয়ালি থানা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন।