আবু সাঈদ হত্যা মামলায় দুই পুলিশ সদস্য চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত
নিজস্ব প্রতিনিধি:
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুরে নিহত আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত দুই পুলিশ সদস্যের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এরা হলেন তাজহাট মেট্রোপলিটন থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়।
মঙ্গলবার সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টে্রট আদালত—২ এ ওই দুই পুলিশ সদস্যকে হাজির করা হয়। এর মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই(পুলিশ ইনভেস্টিগেশন আব ব্যুরো) রংপুর এর পক্ষ থেকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালতের বিচারক আসাদুজ্জামান শুনানি শেষে চার দিন মঞ্জুর করেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার জাকির হোসেন।
সোমবার বিকেলে মামলার আসামি হিসেবে মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছ থেকে তদন্ত কর্মকর্তার রিক্যুইজিশনের ভিত্তিতে তাদের দুজনকে পিবিআইএর কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর পর তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিবিআই হেফাজতে নেয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটের সামনে পুলিশ ও আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ রয়েছে এ ঘটনায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ।
এ ঘটনার পর গত ১৮ আগস্ট রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তাজহাট আমলি আদালতে আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বাদী হয়ে পুলিশ কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষকসহ ১৬ জনের নামে এবং অজ্ঞাত ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
এর আগে গত ১৭ জুলাই পরস্পর যোগসাজসে বেআইনি জনতাবদ্ধে সাধারণ ও মারাত্মক অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সরকারি কাজে বাধার সৃষ্টি করে গুরুতর জখম, চুরি, ভাঙচুর, ক্ষতিসাধন, অগ্নিসংযোগ ও নিরীহ ছাত্রকে হত্যার অপরাধে মেট্রোপলিটন তাজহাট থানায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয় ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতি ভূষণ রায়। এতে আসামি করা হয় অজ্ঞতানামা উচ্ছৃঙ্খল দুই থেকে তিন হাজার আন্দোলনকারী ছাত্রনামধারী দুর্বৃত্তসহ বিএনপি, জামায়াত—শিবির সমর্থিত নেতাকর্মীদের।
মামলার বিবরণের মাঝে এক জায়গায় উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন দিক থেকে আন্দোলনকারীদের ছোড়া গোলাগুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের একপর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে রাস্তায় পড়ে যেতে দেখা যায়। তখন সহপাঠীরা তাকে ধরাধরি করে জরুরি চিকিৎসার জন্য বিকেল ৩টা ৫মিনিটে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত ছাত্রের নাম আবু সাঈদ।
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্য এতদিন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনস্এ পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছিলো। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে তাই তদন্তের সার্থে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের জন্য ৯ তারিখ সোমবার বলা হয়। এরপর তাদের মেট্রোপলিটন পুলিশ পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করলে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এখন তাদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ তথ্য জানিয়েছেন পিবিআই রংপুরের পুলিশ সুপার জাকির হোসেন।