বিরল মহিলা ডিগ্রী কলেজ এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুনীর্তির অভিযোগ
আতিউর রহমান, বিরল (দিনাজপুর):
দিনাজপুরের বিরল মহিলা ডিগ্রী কলেজ এর অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ এরফানুল হক এর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুনীর্তির অভিযোগসহ বিধি বহিভূর্তভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান এবং অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুফিয়া নাহার এর আমলে শিক্ষক—কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্যের তদন্তের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজের সভাপতি বহ্নি শিখা আশা এর নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ওই অভিযোগে বিরল মহিলা কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীবৃন্দ জানান, অত্র কলেজের অধ্যক্ষ সুফিয়া নাহার চাকুরী হতে অবসরে যাওয়ার পর ১১/০৬/২০২৩ ইং তারিখ হতে মোঃ এরফানুল হক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অত্র কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকুরীর শর্তাবলী রেগুলেশন (সংশোধিত) ২০১৯, এর ২(১) ধারা মোতাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সর্বোচ্চ ০১(এক) বছরের দায়িত্ব পালনের বিধান রয়েছে এবং উক্ত সময়ের মধ্যে অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের সময়সীমা ০৯/০৬/২০২৪ইং তারিখ পর্যন্ত বর্তায় এবং অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। তাই তিনি ১০/০৬/২০২৪ ইং তারিখ হতে বিধি বর্হিভূতভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাই কলেজের দায়িত্ব হতে অব্যহতি প্রদান ও আর্থিক অনিয়মের তদন্তের আবেদন জানান আবেদনকারীগণ।
অভিযোগে আরো জানানো হয়, স্মারক নং—০৭ (১৫২৫) জাতী:বি:/ক:প:/৫৪৬১১৪, সুত্র নং—০৭ (১৫২৫) জাতী:বি:/ কঃপ:/ ৫১৭৫১, তারিখ—০১/১১/২০২১ ইং ভাইস—চেন্সেলর মহোদয় এর প্রজ্ঞাপন মোতাবেক দ্রুত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ করা প্রয়োজন। উল্লেখ্য যে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং—৩৭,০০,০০০০.০৭৪.০০২.০০১, ২০২১.৫১, তারিখ—০৫/০২/২০২৪ ইং মোতাবেক নিয়োগ নীতিমালা অনুসৃত হবে।
এছাড়াও অভিযোগে প্রকাশ করা হয়, স্মারক নং— ৩৭,০০.০০০০.০৭২,৪৪.০৫.২২.১৬১, তারিখ—৩১/০৭/২০২৩ ইং এর প্রজ্ঞাপন নীতিমালা ১২. (র) (রর) (ররর) (রা) ও (া) ধারা অনুসরণ না করে ক্ষমতাসীন সরকার এর আনুকুল্য নিয়ে এককভাবে কলেজের হিসাব পরিচালনা করেছেন। তিনি তার মেয়াদকালে অর্থ ও ক্রয় কমিটি, অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটি ছাড়াই এককভাবে হিসাব বহি পরিচালনা করেছেন। যার ধারাবাহিকতা বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বজায় রেখেছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ এরফানুল হক, ছাত্রীদের নিকট হতে অতিরিক্ত ভর্তি ফি ও বিবিধ কালেকশন হতে আদায়কৃত অর্থ পুরোপুরি কলেজ হিসাবে জমা না করে আত্মসাৎ করে থাকেন। এতে প্রতিয়মান হয় যে, সাবেক অধ্যক্ষ সুফিয়া নাহার ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ এরফানুল হক, অনিয়ম, দূর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে কলেজের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সাবেক অধ্যক্ষ সুফিয়া নাহার কলেজে জমি দান করার বিনিময়ে মোঃ মামুনুর রশীদ ও মোঃ আনোয়ার হোসেনকে ৪র্থ শ্রেণীর চাকুরীতে নিয়োগ প্রদান করেন। তাদের এমপিওভূক্তির ব্যবস্থা না করে পরবর্তীতে গভর্ণিং বডির বিদ্যোৎসাহী সদস্য ও ক্ষমতাসীন সরকার এর বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত রায় এর যোগসাজসে নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে আরও ০৪ (চার) জন ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ প্রদান করেন এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ এরফানুল হক তাদের এমপিওভূক্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
অভিযোগকারী সিনিয়র প্রভাষক (মনোবিজ্ঞান) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, সিনিয়র প্রভাষক (অর্থনীতি) আবু তাহের মোঃ নূরুজামান, সহঃ অধ্যাপক (গনিত) মোঃ আব্দুল কাইয়ুুম, সহঃ অধ্যাপক (জীববিজ্ঞান) ফারহানা ইয়াসমীন, সিনিয়র প্রভাসক (আইসিটি) মোঃ শাহিনুর আলম ও প্রদর্শক মোসাঃ শাহনাজ পারভীনসহ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এরফানুল হক মিঠু এর দ্রুত অপসারণ সাপেক্ষে অনিয়ম, দূর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ এরফানুল হক কিছু জানেন না বলে জানালে মুঠোফোনে তাঁর নিকট এক বছরের অতিরিক্ত সময় কিভাবে দায়িত্ব আছেন জানতে চাইলে তিনি সাক্ষাতে জানাতে চান। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত হলে তিনি কাগজপত্র প্রদর্শন করবেন বলে জানান। ছাত্রীদের নিকট হতে অতিরিক্ত ভর্তি ফি ও বিবিধ কালেকশন হতে আদায়কৃত অর্থ কলেজ হিসাবে জমা না করে আত্মসাৎ বিষয়ে তিনি বলেন এগুলো ব্যাংক হিসাব নম্বরেই জমা করা হয়, কাগজ আছে।