পীরগাছায় গাছ বিক্রির এক কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ: পলাতক ইউপি চেয়ারম্যান
পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নুর আলমের বিরুদ্ধে সরকারি রাস্তার ৪ হাজার গাছ বিক্রির এক কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনার সাথে আরো ৪ ব্যক্তি জড়িত বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। ২০১৮ সালে ক্ষমতার প্রভাব খাঁটিয়ে এসব গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টা, দুর্ণীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করছেন ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কাওছার আলম।
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের তালুক পশুয়া মৌজার নব্দীগঞ্জ বাজারের আর কে রোড হইতে বিহারী, বড়দরগাহর ফকিরা গ্রামের এন্তাজ আলীর বাড়ি পর্যন্ত ১৯৯১ সালে দাতা সংস্থা কেয়ার বাংলাদেশ প্রকল্পের অর্থায়নে ৬ কিলোমিটার রাস্তা পূর্ণ নির্মাণ করে ৫ হাজার ইউক্যালিপ্টাস গাছের চারা রোপন করা হয়। উক্ত গাছ পরিচর্যার জন্য মাসিক বেতনে ২০ জন মহিলা নিয়োগ দেয়া হয়। এর মধ্যে খরা ও ঝড়—বৃষ্টির কারণে এক হাজার গাছের চারা নষ্ট হয়ে গেলে বাকি ৪ হাজার চারা পরিপূর্ণ বিশাল আকৃতির গাছে পরিনত হয়। এরপর ২০১৬ সালে প্রভাব খাঁটিয়ে আওয়ামীলীগ নেতা নুর আলম ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৮ সালে তার একান্ত ব্যক্তি সামছুল আলম সানি, ইয়াছিল আলী, মুকুল মিয়া ও আব্দুর রাজ্জাক এর সহায়তায় সরকারি কোন অনুমোদন কিংবা টেন্ডার ছাড়াই এক কোটি ২০ লাখ টাকা বিক্রি করে দেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান নুর আলম ওই ৪ ব্যক্তির সহযোগিতায় পুরো টাকা আত্মসাত করেন বলে অভিযোগ করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম, তছলিম উদ্দিন জালাল, আব্দুল খালেক বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে যারা বাঁধা দিয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান নুর আলম তার লোকজন দিয়ে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারপিট ও হুমকি—ধামকি দিয়েছে। তারা ক্ষমতায় ছিল, তাই কেউ জোরালো প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি।
অভিযোগকারী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কাওছার আলম বলেন, নুর আলম সাবেক বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি’র একান্ত আস্থাভাজন ছিলেন। তিনি এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে সাধারন মানুষকে কোনঠাসা করে রাখতেন। তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলে তাকে হুমকি—ধামকি এমনকি মামলা—মোকদ্দমা দিয়ে হয়রানি করতেন। তিনি ৬ কিলোমিটার রাস্তার গাছ কেটে বিক্রির এক কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাত করলেও কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি। তাই আমি বর্তমান সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট তার দুণীর্তি—অনিয়ম তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করছি।
এসব বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান নুর আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর থেকে পলাতক রয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।