২৯ আশ্বিন, ১৪৩১ - ১৪ অক্টোবর, ২০২৪ - 14 October, 2024

মিঠাপুকুরে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে প্রথম হয়েও চাকুরি বঞ্চিত

আমাদের প্রতিদিন
4 weeks ago
37


১০ বছর আদালতের বারান্দায়, রায় পেয়েও মিলছেনা নিয়োগপত্র

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি:

মিঠাপুকুরে ফরিদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম প্রহরী পদে পরীক্ষায় প্রথম হয়েও চাকুরি পাননি সাইদুল ইসলাম। ১০ বছর ধরে আদালতের ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন তিনি। রায় পেয়েও চাকুরী ফিরে পাচ্ছেন না তিনি। আদালতের রায়সহ একাধীকবার জেলা শিক্ষা কার্যালয় ও উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে আবেদন করেও মিলছেনা সমাধান। একারণে হতাশ হয়ে পড়েছেন তিনি। এখন দু’মুঠো খাবার জোগাড় করতে দিনমজুরের কাজ করছেন তিনি। চাকুরি প্রত্যাশী সাইদুল ইসলাম ফরিদপুর গ্রামের আব্দুল ছাত্তার খাঁনের ছেলে।

আদালতের রায় ও খোঁজ—খবর নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে কয়েকজন আবেদন করলেও পরীক্ষায় প্রথম হন সাইদুল ইসলাম, দ্বিতীয় হন অতুল চন্দ্র ও তৃতীয় হন সাদিক রহমান। টেবুলেশন সিট ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি রেজুলেশন করে ৭ জুলাই ২০১৪ সালে মেধাক্রম অনুমোদন ও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহন ও পলাফল প্রস্তুত করণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে পাঠান। কিন্তু কোন কার্যক্রম পরিচালনা না করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় হতে মেধাক্রমে তৃতীয় অবস্থানে থাকা সাদিক রহমানকে জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করে। এরপর আদালতে দ্বারস্থ হন মেধাক্রমে প্রথম হওয়া সাইদুল ইসলাম। চাকুরি ফিরে পেতে কয়েকবার আদালতের রায়ও পেয়েছেন তিনি। কিন্তু এখনও চাকুরি ফিরে পাননি।

সাইদুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষায় আমি প্রথম হয়েছিলাম। তারপরও আমাকে বাদ দিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা ব্যক্তিকে নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়েছিল। মুলত. তৎকালিন সংসদ সদস্য এইচএন আশিকুর রহমানের হস্তক্ষেপে এটি হয়েছে। আমি আদালতে মামলায় রায় পেয়েছি। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতার কারণে চাকুরি ফিরে পাচ্ছিনা। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমি নিঃশ^ অবস্থায় রয়েছি। দিনমজুরেরর কাজ করে চলছে সংসার। একবেলা খেলে আরেক বেলা না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। আমি ন্যায় বিচার চাই।

ফরিদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৎকালিন প্রধান শিক্ষক নিশিকান্ত রায় বলেন, দপ্তরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগে সাইদুল ইসলাম প্রথম হয়েছিল। তাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য টেবুলেশন সিট, রেজুলেশন করে ইউএনও’র কার্যালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সাইদুল ইসলাম চাকুরি পাননি। পরীক্ষায় তৃতীয় স্থানে থাকা ব্যক্তিকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল।

ফরিদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক জাহান আরা বেগম বলেন, দপ্তরি কাম প্রহরী পদে দায়িত্ব পালন করছেন সাদিক রহমান। তবে তার টেবুলেশন সিট ও রেজুলেশন কোনটি আমার বিদ্যালয়ে নেই। শুধুমাত্র ইউএনও’র কার্যালয়ের একটি নিয়োগপত্রের কপি রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তৎকালীন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির একজন সদস্য বলেন, পরীক্ষায় এগিয়ে ছিলেন সাইদুল ইসলাম। কিন্তু তৃতীয় স্থানে থাকা সাদিক রহমানের পরিবারের সদস্যরা তৎকালিন এমপি এইচএন আশিকুর রহমানের কাছের মানুষ। একারণে নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক শাহ বলেন, সাইদুর রহমান নামে একজন অভিযোগ করেছেন। বর্তমান পেক্ষাপটের কারণে তদন্ত করা হয়নি। এখন তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

  

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth