প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবীতে একই দিনে দুইবার মহাসড়ক অবরোধ
তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় বড়গোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলিয়ার রহমানের বিভিন্ন অনিয়ম ও পারিবারিকতন্ত্র প্রতিষ্ঠান করার অভিযোগে একই দিনে দ্বিতীয়বারের মত তার পদত্যাগের দাবীতে মহাসড়ক অবোরধ করে মানবন্ধন করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী রংপুর—দিনাজপুর মহাসড়কের বারাতিনামক স্থানে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা অবরোধ করেন। এর আগে একই দিনে দুপুর প্রায় ১ ঘটিকা থেকে ২ ঘটিকা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধ করেন । এসময় রংপুর দিনাজপুর মহাসড়কের উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়লে খবর পেয়ে থানা পুলিশকে সাথে নিয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোঃ রুবেল রানা ঘটনাস্থানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে চান। এতে শিক্ষার্থীরা রাজি হয়ে মহাসড়ক থেকে সরে যায়। পরে প্রতিষ্ঠানের সভাকক্ষে গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন ইউএনও। শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের বিষয়ে শ্লোগান দিলে ইউএনও রুবেল রানা তদন্ত কমিটি গঠন করে ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন পেয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আম্বাস প্রদান করেন। কিন্তু শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা ইউএনওর কথা না শুনে আবারো বিকাল ৫টা থেকে৬টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে ইউএনও রাসেল মিয়া ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের বুঝালে তারা মহাসড়ক থেকে সরে যায়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আলিয়ার রহমান দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের পদে থেকে তার স্ত্রী আলেয়া বেগমকে সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিলেও প্রায় দিনেই বিদ্যালয়ে আসেন না। বিদ্যালয়ের পিয়ন তারাজুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক পরিবারের অংশ হওয়ায় নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই বিদ্যালয়ে না এসে দীর্ঘদিন ধরে বেতন—ভাতা তুলে আসছেন। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ের ১৩ শিক্ষক—কর্মচারীর মধ্যে প্রধান শিক্ষকের পরিবারের ৮ জন শিক্ষক—কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে বিদ্যালয়টি পরিবারতন্ত্র বানিয়েছেন। মানববন্ধনে এসব বক্তব্য তুলে ধরার মধ্য দিয়ে নিয়োগ বানিজ্যসহ অতিরিক্তভাবে শ্রেনিভেদে রেজিষ্ট্রেশন ফি, ভর্তি ফি, পরীক্ষার ফি, এস.এস.সি’র ফরম পুরণ এবং বাধ্যতামুলক কোচিং ফিসহ বক্তারা প্রধান শিক্ষক আলিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, একই প্রতিষ্ঠানে আলিয়ার রহমান প্রধান শিক্ষক ও তার স্ত্রী আলেয়া বেগম সহকারী প্রধান শিক্ষক। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের ভাতিজা আজম আলী সহকারী শিক্ষক, ভাতিজার স্ত্রী মোরশেদা বেগম ও লাইজু বেগম সহকারী শিক্ষক । এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আলিয়ার রহমানের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তার মন্তব্য নেয়া যায়নি। উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোঃ রুবেল রানা জানান, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ গুলোর বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান।