পীরগঞ্জে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ
পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি :
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে ৩টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ভাকুড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবলুর রশিদের বিরুদ্ধে। ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে গত ১২ সেপ্টেম্বর লিখিত আবেদন করেছেন ১৫ জন চাকুরী প্রত্যাশী।
লিখিত আবেদন ও চাকুরী প্রত্যাশীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভাকুড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি'র যোগসাজস করে গত জুলাই মাসের ৮ তারিখে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিদ্যালয়টির ল্যাব এসিসটেন্ট, অফিস সহায়ক ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন প্রধান শিক্ষক বাবলুর রশিদ। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির খবরটি গোপন রেখে নিজের মনোনীত প্রার্থীদের দিয়ে আবেদন করান এবং তিনটি পদের জন্য ৩ জনের কাছ থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। আবেদনের সময় শেষ হওয়ার পর চাকুরী প্রত্যাশীরা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়টি জানতে পেরে প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে আবেদনের আর কোন সুযোগ নেই বলে জানান তিনি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির খবরটি গোপন রাখায় আবেদনের সুযোগ পাননি ওই এলাকার বেকার মেধাবী শিক্ষিত যুবকরা।
ভাকুড়া এলাকার শাহজাহান আলী নামে একজন চাকুরী প্রত্যাশী জানান, জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সহসভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আকতারুল ইসলাম কে বিদ্যালয়ের সভাপতি করে আওয়ামীলীগ সমর্থিত লোকজনকে ম্যানেজিং কমিটিতে রেখে বিদ্যালয়টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলছেন প্রধান শিক্ষক। তারা নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে যা ইচ্ছে তাই করছেন। অমরা অসহায়। আমাদের কিছুই করার নেই। গোপনে নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। উপায় না পেয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি বাতিল করে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও নতুন করে ম্যানেজিং কমিটি করার জন্য ইউএনও স্যারের কাছে লিখিত আবেদন করেছি।
ধনীপাড়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন জানান, আমার ছেলে একটি পদে চাকুরীর জন্য আবেদন করলে ১২ লাখ টাকা ছাড়া চাকুরী হবে না বলে জানান প্রধান শিক্ষক। পরে হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন ৮ লাখ টাকায় মিটমাট করার চেষ্টা করলেও প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি তা মানেন নি। এত টাকা ম্যানেজ করতে না পারায় আমি হাল ছেড়ে দিয়েছি।
অভিযোগ বিষয়ে ভাকুড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবলুর রশিদ জানান, ম্যানেজিং কমিটির সাথে পরামর্শ করে নিয়ম মেনেই জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
এখন পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। এটা আমার বিরুদ্ধে একটি স্বার্থান্বেষী মহল অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
এ বিষয়ে ভাকুড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি এলাকায় না থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তার মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রমিজ আলম জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।