সড়কের বেহাল দশা বন্ধ হল রংপুর-মহিপুর-পাটগ্রাম মহাসড়কে ভারী যান চলাচল
নির্মল রায়,গঙ্গাচড়া (রংপুর):
সড়কের বেহাল দশায় আবারো বন্ধ হল রংপুর-মহিপুর-পাটগ্রাম মহাসড়কে ভারী যান চলাচল। সড়কটি তৈরীর পর এ নিয়ে ৩ বার ভারি যান চলাচল উন্মুক্ত ও বন্ধ করা হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রংপুর কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ৬ মাস আগে সরকারি দরপত্রের মাধ্যমে গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের সেরাজুল মার্কেট থেকে বুড়িরহাট পর্যন্ত তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স খায়রুল কবির রানা, কে কে আর লিমিটেড ও বরেন্দ্র লিমিটেড যৌথভাবে ১১ কিলোমিটার সড়কটি প্রায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কার্পেটিং ও সড়ক বর্ধিতকরণের কাজ করে। এবং সিরাজুল মার্কেট এলাকা থেকে লালমনিরহাটের কাকিনা পর্যন্ত অংশটি ৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজ করেছে শাহাদাত এন্টারপ্রাইজ ।
স্থানীয়দের দাবি, সড়কটি দিয়ে মাত্রা অতিরিক্ত ভারী যান চলাচলের কারনে বর্ধিতকরণ কাজ শেষ হবার মাত্র ৬ মাসের মধ্যেই ১১ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থান দেবে গিয়ে ফাটল শুরু হয়েছে, যার ফলে সড়কটি দিয়ে চলাচলের সময় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা।
সম্প্রতি এ কারণে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব এলজিইডি ও প্রশাসনের কাছে সড়কটি নিয়ে ১০ টি দাবি তুলে সড়কটি পূর্ণ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত ভারী যানবাহন না চালানোর দাবি তোলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
এরই প্রেক্ষিতে গত বুধবার লালমনিরহাটের কাকিনা ইউনিয়নের মিলন বাজার এলাকায় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড নির্মাণ করতে গেলে বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাদের তোপের মুখে পড়েন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। এসময় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মুন্না তাদের হামলায় আহত হন। পরে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জহির ইমাম ও সেনাবাহিনী শিক্ষার্থীদের ব্যারিকেড নির্মাণ এবং ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধের আশ্বাস দিলে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এরই পরিপেক্ষিতে গত বুধবার মিলন বাজার এলাকায় ব্যারিকেড নির্মাণ করে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হয়।
সেতু এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মোন্নাফসহ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান,‘ প্রতিদিন কয়েকশ পাথরবোঝাই ট্রাক চলাচল করে এই রাস্তাটি দিয়ে। যেগুলোর ওজন ৫০ থেকে ৭০ টন পর্যন্ত। গত ৬ মাস আগে পুরা রাস্তাটি ভালো করা হয়েছে। এ রাস্তাগুলো বালুর উপর নির্মিত। যদি অভারলোড নিয়ন্ত্রন করা না যায় তাহলে যত ভালো কাজ করুক না কেন রাস্তা নষ্ট হবে। এই ভারী যান চলাচলের কারণে সেতুটির উপরের কার্পেটিং ফেটে গেছে।
রংপুরের স্থানীয় ঠিকাদার আব্দুর রব রাঙ্গা বলেন, সড়কটি লোড ধারণ ক্ষমতা ২০ টণ সেখানে ৪০ থেকে ৫০টণ লোড নিয়ে সড়ক টির উপর দিয়ে ভারী যানচলাচল করছে। তাহলে কেমনে এ সড়ক টিকবে। এই সড়কটিতে যতই ভালো কাজ করা হোক না কেন এভাবে ওভারলোড সড়কের উপরে উঠলে সড়ক এমনিতেই ফেটে চৌচির হয়ে যাবে। ওভারলোড নিয়ে আমরা কয়েকবার ডিসি স্যারকে বলেছি তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণেই করেননি। যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা ঠিকাদাররা। দুর্নাম হচ্ছে আমাদের যে আমরা ভালো কাজ করিনি।
এবিষয়ে এলজিইডির রংপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুসা বলেন, অভারলোডের পাথরবাহী ভারী যানবাহন চলাচল করায় সড়কটি চাপ নিতে পারছে না। এবিষয়ে আমরা প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা নিবাহী অফিসার জহির ঈমাম বলেন,‘ সড়কে প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে মন্ত্রণলায় থেকে সিদ্ধান্ত দিয়েছে আমরা নিজে থেকে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিনি।